কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২৭ নভেম্বর, ২০১৮

ফের বাঁকখালী নদী দখল করে মাছের ঘের

কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়া অংশে বাঁকখালী নদী দখল করে ফের মাছের ঘের নির্মানের কাজ চলছে। এর আগে গত ৮ এপ্রিল সেখানে অভিযান চালিয়ে মৎস্য ঘেরের বাঁধ কেটে দিয়ে বাঁকখালী নদীর সঙ্গে সংযোগ করে দেয়া হয়। এ ঘটনার দুই দিন পর স্থানিয় প্রভাবশালীরা শ্রমিক দিয়ে নদীতে আবারও বাঁধ দিয়ে মাছের ঘেরের কাজ শুরু করে। এখন সেখানে মাছের ঘেরের পাশাপাশি খন্ড খন্ড করে প্লটও বিক্রি করা হচ্ছে।

বাঁকখালী নদীর উত্তর নুনিয়াছড়া টুইট্ট্রার মাথা থেকে শুরু করে মাঝিরঘাট পর্যন্ত অংশে ছোট-বড় প্রায় ১০টি মাছের ঘের গড়ে উঠেছে। এসব ঘের তৈরীতে নির্বিচারে কেটে ফেলা হয় প্যারাবন। প্রকাশ্যে দিনে-রাতে প্যারাবন ও জীববৈচিত্র্য নিধন করে এসব মাছের ঘের গড়ে উঠলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে ইতিপূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কয়েকজনকে নোটিশ ইস্যু করে অদৃশ্য কারণে চুপ হয়ে যান সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া দিনে-রাতে প্রকাশ্যে প্যারাবন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে মাছের ঘের গড়ে তুলেছে প্রভাবশালীরা।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দিপু বলেন, ‘প্রকাশ্যে প্যারাবন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে মাছের ঘের তৈরী করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। ক্ষেত্র বিশেষে ধরে নিয়ে নামে মাত্র জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘের তৈরীর মৌখিক অনুমতিও দেয়া হচ্ছে, যা অত্যান্ত দুঃখজনক।’

সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আ.ন.ম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘নদী ও নদীর তীরে মাছের ঘের তৈরীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হলেও দখলদাররা তা নেয়নি। অপরদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এতে আইন না মানতে উৎসাহিত হচ্ছে মানুষ।’

জেলা পিপলস ফোরামের সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘একদিনে এসব মাছের ঘের তৈরী হয়নি। প্রকাশ্যে বাঁকখালী নদী দখল করে অবৈধভাবে মাছের ঘের তৈরী করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বলেন, ‘বাঁকখালী নদীর তীরে যেসব মাছের ঘের গড়ে উঠেছে, তার কোনটিরই পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। তাছাড়া অধিকাংশ ঘেরই নদী ও নদীর তীর দখল করে সরকারি জায়গায় তৈরী করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে দ্রুত এসব উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার (ভূমি) এ.এইচ.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাঁকখালী নদীতে অবৈধভাবে মাছের ঘের তৈরীর বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close