কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

  ১২ নভেম্বর, ২০১৮

কয়রায় পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়ছে নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের

খুলনার কয়রা উপজেলায় পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়ছে নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েদের। সরকারী সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি আধুনিক জীবন মানকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন।

এক সময় এ উপজেলা থেকে কেউ কোন শহরে গেলেই তাদের কাছেই আবদার ছিল, গ্রামে যাচ্ছ, একজন ‘কাজের মেয়ে’ নিয়ে এসো। ছেলে হলেও চলবে। সত্যি বলতে- একজন কাজের লোক শহরবাসিদের খুব দরকার। কিন্তু কয়রায় সে ধারণা পাল্টেছে। এখন গ্রামের ছেলেমেয়ে মানেই শহরের বাসায় কাজ করতে যাওয়া কাজের লোক নয়। ওরা সবাই এখন স্কুলে যায়। চোখে আগামীর স্বপ্ন। শত অভাব আর হতাশা থাকুক না কেন সব পরিবার এখন মনে করে তাদের সন্তান লেখা পড়া শিখে মানুষ হোক।

উপকুলীয় এ উপজেলায় কয়েকটি প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সকাল হলেই দলবেঁধে স্কুলে যায় ছেলে-মেয়েরা। স্থানীয় প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্কুলে নির্দিষ্ট সময়ে জমজমাট। শিক্ষক শিক্ষিকারা ব্যস্ত নানা ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সামলাতে। কিন্তু এমন একটি সময় ছিল স্কুলে ছেলে মেয়ে পাওয়া ভার। মাদরাসা শিক্ষায়ও আলোকিত হচ্ছে এ সকল শিশুরা। উপজেলার দক্ষিন বেদকাশি ইউনিয়নের জোড়শিং গ্রামের মিজানুর রহমান, আজিবার মোল্যা নিরপেন মুন্ডা তারা বলেন, উপবৃত্তি চালুসহ সরকারের নানা চষ্টায় স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রায় শতভাগ। আগে বাড়তি আয়ের জন্য অনেকে ছেলে-মেয়েকে কাজে পাঠাতেন। কিন্তু সেদিন বদলেছে। শিক্ষার্থী প্রতি সরকারের আর্থিক সহায়তা বেড়েছে। অভিভাবকরাও হয়েছেন সচেতন। যে কারণে কষ্ট করে হলেও তারা সন্তানদের শিক্ষিত করতে চান। পরবর্তী প্রজন্মকে তারা আর অন্ধকারে রাখতে চান না।

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের বেদকাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লস্কর মাহফুজুর রহমান প্রবাহকে বলেন, গ্রামের মানুষও এখন শিক্ষার মর্ম অনুধাবন করতে পারেন। তারা অশিক্ষিত হলেও সন্তানদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চান। তাছাড়া সরকার বিনা খরচে পড়ালেখার ব্যবস্থা করছে।

গড়িয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকুমার থান্দার বলেন, দরিদ্রতার কারণেই এক সময় এসব অঞ্চলের অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েকে স্কুলের বদলে কাজ করতে পাঠাতেন। এখন দেশে অভাবও আগের মতো নেই। আর সরকারের সহায়তাও যথেষ্ট। যে কারণে কাজের মানুষ খুঁজতে গ্রামে আসা এখন বোকামি ছাড়া কিছু নয়। মদিনাবাদ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ সরোয়ার বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থী মাসে একশো টাকা উপবৃত্তি পায়। প্রতি তিনমাস পর পর সে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া কিছু সময় স্কুলের টিফিন হিসেবে এক প্যাকেট করে বিস্কুটও দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close