জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
মাছের খাদ্যে ব্যবহার হচ্ছে মুরগির বিষ্ঠা, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় মাছের খাদ্য হিসাবে মুরগীর বিষ্ঠা ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে অল্প দিনে মাছ বেড়ে উঠলেও রোগ জীবানুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সেই সঙ্গে পুকুরের পানি দূষিত হয়ে মশা ও পোকা মাকড়ের বংশ বিস্তার হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে মৎস্য চাষের আওতায় ছোট বড় মিলে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার পুকুর ও শতাধিক হাঁস-মুরগীর খামার। খামারগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক বস্তা বিষ্ঠার উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত এ সব বিষ্ঠার শিংহভাগ মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন খামারীরা। এ থেকে মাছের মাধ্যমে নাইট্রোফুরান নামের রাসায়নিক পদার্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। যা দেহের জন্য মারাতœক ক্ষতিকর।
উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ওয়াপদা মোড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকার পুকুরে মুরগীর বিষ্ঠা ভর্তি বস্তা ভাসতে দেখা যায়। যা একাধিক প্রকৃতির মাছ ঠুকড়ে খাচ্ছে। তবে সেগুলির গন্ধে সড়ক দিয়ে যাতাযাত মুশকিল হলে পড়েছে।
জাহাঙ্গীর নামের এক খামারী জানান, মুরগীর বিষ্ঠা খেয়ে মাছ তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠে। কিন্তু পানি থাকে দুগন্ধযুক্ত। মশা, মাছির উপদ্রব বেড়ে যায় দ্বিগুন।
মিন্টু নামের অপর এক খামারী বলেন, মুরগীর বিষ্ঠার ব্যবহার এলাকায় খুব একটা বেশি নয়। এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে এক মৌসুমে (৩মাস) মাছের খাদ্য খইলসহ দানাদার খাদ্য ব্যবহারে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু মুরগীর বিষ্ঠা ব্যবহারে খরচ হয় মাত্র ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ দানাদার খাদ্য দিলে লাভের অংক বেড়ে যায় অনেক গুন। মুরগীর বিষ্ঠা খেয়ে মাছের মাধ্যমে মানবদেহে রোগজীবানু ছড়াতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে তিনি ভেবে দেখেননি। তাছাড়া মৎস্য কর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্তে এলেও বিষ্ঠা ব্যবহারে সুফল বা কুফল নিয়ে কোন কথাই তারা জানাননি খামারীদের। উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা খগেন্দ্রনাথ রায় জানান, মুরগীর বিষ্ঠা মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। কারণ এ বিষ্ঠার মধ্যে কোটি কোটি জীবানু রয়েছে। যা মানব দেহের জন্য মারাতœক ক্ষতিকর। তিনি আরো বলেন, ‘মুরগীর বিষ্ঠায় নাইট্রোফুরান নামের একটি পদার্থ রয়েছে। যেটি মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা শতভাগ।’
এ বিষয়ে ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, মুরগীর বিষ্ঠা খাওয়া মাছ খেয়ে মানবদেহে আক্রান্ত হতে পারে নানা ধরনের জটিল পীড়া। দৃষ্টিভঙ্গি ও লোপ পেতে পারে। রক্ত আমাশা হতে পারে চিরদিনের সাথী। বিশেষ করে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইউএনও এস এম গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি সদ্য এ উপজেলায় দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
"