ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

  ২৪ অক্টোবর, ২০১৮

স্লিপ প্রকল্পের টাকা নয়ছয়

ঝিনাইদহের ১০০ প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিস

ঝিনাইদহ জেলায় একশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। যথাসময়ে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (স্লিপ) টাকার হিসাব না দেওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আক্তারুজ্জামান তাদেরকে কারন দর্শাও নোটিশ জারি করেন।

তিনি এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র হরিণাকুন্ডু উপজেলা থেকে কারণ দর্শাও নোটিশের জবাব দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকার বিল ভাউচার। তবে গোটা জেলায় স্লিপ প্রকল্পের টাকা কিছু না কিছু নয় ছয় হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা আশংকা প্রকাশ করেন।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, জেলায় স্লিপ প্রকল্পের আওতায় ৯০৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১৪টি, কালীগঞ্জে ১৫১টি, কোটচাঁদপুরে ৭৪টি, মহেশপুরে ১৫৩টি, শৈলকুপায় ১৮০টি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৩৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে গত জুনের আগে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে দেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা। বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন কর্মসুচি বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যৌথ একাউন্টে এই টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলে ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে টাকা আত্মসাত করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে। স্লিপ প্রকল্পের বরাদ্দ ও খরচ করানো সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘অগ্রিম হিসেবে উত্তোলিত স্লিপ প্রকল্পের অর্থ কোনোরূপ বিলম্ব না করে দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করতে হবে এবং ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু সরেজমিন দেখা গেছে, ভুয়া ভাউচার ও প্রত্যায়নপত্র জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কোন কাজ করা হয়নি। মহেশপুরের ১৫ নং কুশাডাঙ্গা সরকারী প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা খাতুনকে স্কুল পরিচালনা কমিটির এক সদস্য টাকার হিসাব চাইলে তিনি মানহানী মামালা করার হুমকী দেন। স্লিপ কমিটির সভাপতি মকছেদ আলী নিজেই এই টাকার খবর জানেন না বলে অভিযোগ করেন। তারা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ মহেশপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ যে জবাব দিচ্ছেন তার সঙ্গে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে সংযুক্ত করছেন। ফলে ওই টাকায় তারা কি কাজ করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে না। এদিকে জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতি বছরই স্লিপ প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আগে তো জবাবদিহিতা ছিল না। এখন হিসাব নেওয়া হচ্ছে। এটা একটা নজীর বলা যায়। কোন প্রধান শিক্ষক বা কমিটি প্রধান স্লিপের টাকার দালিলিক প্রমান দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে ডিডি খুলনাকে চিঠি দেওয়া হবে। কারো ছাড় দেওয়া হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখনো কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close