রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি

  ২৩ অক্টোবর, ২০১৮

আইন অমান্য

রানীশংকৈলে ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য মজুদ করা হচ্ছে কাঠখড়ি

ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ইটভাটায় জ্বালানোর লক্ষ্যে হাজার হাজার মেট্রিক টন কাঠখড়ি মজুদ করা হচ্ছে। অবাধে গাছ কাটার ক্ষেত্রে নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ইট ভাটাগুলোতে ঘুরে এমনি চিত্র দেখা গেছে। রানীশংকৈলে মোট কতটি ইট ভাটা রয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। তবে নতুন পুরাতান মিলে এই সংখ্যা ২’র অধিক বলে জানা যায়।

ইট পোড়ানোর কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক জানান, নিয়মনুযায়ী কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর নির্দেশ থাকলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কিংবা ফাঁিক দিয়ে মুলত ভাটায় কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হয়।

তারা জানান, একটি বড় ইটভাটায় প্রতি দফায় প্রায় চার লাখের অধিক ইট পোড়াতে সময় লাগে মাস খানেক। এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ মণ কাঠ খড়ি ভাটায় জ্বালানী হিসেবে পোড়ানো হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ মণ কাঠ খড়ি জ্বালানী হিসেবে প্রথম দফায় প্রয়োজন হয় প্রায় প্রায় ১০ হাজার মণ কাঠ। সে হিসেবে বিশের অধিক ভাটায় প্রথম দফা জ্বালানী হিসেবে কাঠ খড়ি পোড়ানো হবে প্রায় ২ লাখ মণ। মৌসুমে ৭ দফা কাঠ পোড়াতে হলে প্রতিটি ভাটায় লাগবে ১৪ লাখ মণ কাঠ খড়ি। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত চলবে ভাটায় ইট পোড়ানোর হিড়িক।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এ বলা আছে কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কোন কাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি এই ধারা লঙ্ঘন করে ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কাঠ ব্যবহার করেন তা হলে তিনি অনধিক তিন বছরের কারাদন্ড বা অনধিক তিন লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।

পৌরশহরের চাদনী সিনেমা হলের বিপরীত আব্দুর রশিদের স’মিলে শত শত মণ গাছের কাঠ ভাটায় পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত করে কাঠের বিশাল ঝাক দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে আব্দুর রশিদের ভাই ইকবালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ভাটার জন্য খড়ি মজুদ করা হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, সরকারকে ট্যাক্স দেওয়া হয়। সরকার জানে ভাটায় কতগুলো খড়ি লাগে। খড়ির সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চাইলে তিনি তার বড় ভাই আব্দুর রশিদের সাথে এ প্রতিবেদকে দেখা করতে বলেন।

একইভাবে ভাটা মালিক রফিকুল ইসলাম রানীশংকৈল- নেকমরদ মহাসড়কে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বিপরিতে মহাসড়কের তার নিজস্ব জায়গাসহ মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে খড়ির স্তুপ দিয়েছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ভাই যখন কয়লা পাইনা তখন কিভাবে ভাটা চলবে বলেন? তাই একটু কাঠ মুজদ করা হচ্ছে। একইভাবে আলী ভাটা তার প্রতিষ্ঠানের পাশেই কাঠ খড়ি মজুদ করছেন। এমনিভাবে উপজেলার ইটভাটার মালিকরা বিভিন্ন জায়গায় কাঠ কিনে ভাটায় জ্বালানোর জন্য আগে থেকেই খড়ি মুজদ করছেন। ইউএনও মৌসুমী আফরিদা বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close