বগুড়া প্রতিনিধি

  ২০ অক্টোবর, ২০১৮

কৃষি কর্নার

সারিয়াকান্দিতে ৩১৯৫ হেক্টর জমিতে গাইঞ্জা ধানের চাষ

যমুনার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের চাষিরা চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে গাইঞ্জা ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এ ধানের চাল চিকন এবং সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খরচ কম হওয়ায় চাষিরা প্রতি বছর বাঙালি ও যমুনা নদীর চরাঞ্চলের ধান চাষ করে থাকেন। যমুনা নদী থেকে পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের চাষিরা স্থানীয় জাতের এই ধান চাষ শুরু করেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দিতে এবার তিন হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে গাইঞ্জা ধানের চাষ হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে যমুনা নদী থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়া শুরু করে। বন্যার পানির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পলিমাটি আসে। উর্বর পলি মাটির ওপর স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান বিনা চাষে রোপণ করে চাষিরা। কোনো সেচ ছাড়াই এ ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হওয়ার কারণে উঁচু নিচু পলিমাটির এক চিলতে জায়গাও ফাঁকা রাখতে রাজি নয় চাষিরা। বীজতলায় ধান গাছের চারার বয়স যখন ২৫-৩০ দিন হয় তখন সেখান থেকে চারা তোলার পর পলিমাটিতে রোপণ করেন। চারা গাছ রোপণের ২০-২৫ দিন পর হালকা ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা হয়। তবে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না এ ফসলে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে প্রতি বিঘায় ১০-১১ মণ গাইঞ্জা ধান পাওয়া যায়। এ ছাড়াও নিড়ানির কোনো প্রয়োজন না হওয়ায় অল্প খরচে এই ধান চাষিদের ঘরে আসে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে।

স্থানীয় চাষিরা জানান, গাইঞ্জা ধান রোপণের উত্তম সময় হচ্ছে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে আশ্বিন মাসের ১৫ দিন পর্যন্ত। তবে আশ্বিন মাসব্যাপী এ ধানের চারা লাগানোর কাজ চলবে। তাই চাষিরা নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

বাগবেড় গ্রামের ইশের আলী এবার এক একর জমিতে ইন্দুর মারা চরের কৃষক আকদুল খালেকের ১২ বিঘা, কর্নিবাড়ী ইউনিয়নের নাড়াপালা গ্রামের চাষি শুকুর মাহমুদ জানান, আমি ১৭ বিঘা জমিতে গাইঞ্জা ধানের চারা রোপণ করেছি। খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি হাজার টাকা। এবার ধানের উৎপাদন ভালো হলে তা পরিবারের চাল নিয়ে সাড়া বছর কোনো চিন্তা করতে হবে না এবং পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে ধান বাজারে বিক্রয় করতে পারব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহাদুজ্জামান জানান, স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধানের চারা রোপণের পর জমিতে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে স্বল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলেই প্রতি বিঘায় ১০-১১ মণ ধান পাওয়া যায়। এ ছাড়াও নিড়ানির কোনো প্রয়োজন না হওয়ায় অল্প খরচে এই ধান চাষিদের ঘরে আসে। ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি কৃষকদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close