মাদারীপুর প্রতিনিধি

  ২০ অক্টোবর, ২০১৮

রাজৈরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই সরকারি গাছ কর্তন

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় কোনো নিয়ম-নীতির তোক্কায় না করেই সরকারী গাছ কেটেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে বেশি ভাগ গাছের উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নিয়মানুযায়ি সরকারি গাছ কাটার জন্য কোনো টেন্ডার আহ্বানের বিধান থাকলেও রক্ষা করা হয়নি তা। দফতরের ঠেলাঠেলিতে পার পেয়ে যাচ্ছে প্রকৃত দোষীরা। পৌর কর্তৃপক্ষের অধিনে প্রস্তাবিত রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটা হলেও পৌর মেয়রের দাবী, এসব বিষয় তার জানা নেই। এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, এ ব্যাপারে কিছুই জানে না তারা।

সরেজমিনে জানা গেছে, রাজৈর পৌরসভার দীঘিরপাড় এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য একটি পাকা সংযোগ সড়কের পরিকল্পনা করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এজন্য কৃষি অফিসের পুরোনো একটি বিড়িং ভেঙ্গে ও ৯টি গাছ কেটে সড়ক করার কাজ শুরু করে। এতে উপজেলার সরকারি কৃষি অফিসের ৭টি রেইট্রি ও পোড়াহল থেকে টেকেরহাট শাহ সুফি জোনাব আলী রোড়ের সামনে প্রায় অর্ধশত বছর পুরোনো আরো ২টি গাছ কাটা হয়েছে। তবে এর মধ্যে দুটি গাছ নিজেদের বলে দাবি করছে অরুপ ঘোষ নামের এক ব্যক্তি। সেই গাছ হরিলুট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে কারোই কোনো মাথা ব্যথা নেই। কেউ কিছুই জানে না বলে দাবী করেছে যথাযথ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে কৃষি অফিসের মাত্র তিন থেকে চার ফিট পশ্চিম পাশ দিয়ে সড়কটি নেওয়া হলে বেঁচে যেতো ৯টি গাছ। তাও কোন টেন্ডার ছাড়া নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই গাছগুলো কেটে ফেলে পৌরসভা। জানতে চাইলে রাজৈর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদুল মিরাজ বলেন, ‘এই গাছগুলো মাপামাপি করে আমাদের ভিতর পড়ে নাই। সেই হিসেবে চেয়াম্যান, ইউএনও, মেয়র সবাই রাস্তা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গাছগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পরে হবে। গাছগুলো পৌরসভার পক্ষ থেকে কেটেছে।’

কেটে ফেলা দুইটি গাছের দাবিদার অরুপ ঘোষ এ ব্যাপারে বলেন, ‘মাপে গাছগুলো আমরা পেয়েছি। তবে গাছের ব্যাপারো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই কেটে রাখা হচ্ছে। পরে সবাই গাছের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবে।’

জানতে চাইলে রাজৈর বন কর্মকর্তা আনোয়া হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘গত মাসিক মিটিং-এ রাস্তার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তবে এব্যাপারে ইউএনও স্যার ও কৃষি অফিসার ভালো বলতে পারবে।’

গাছ কাটা প্রসঙ্গে রাজৈর পৌর মেয়র শামীম নেওয়াজ বলেন, ‘এই গাছ কাটছে কৃষি অফিস। তবে গাছগুলো অরুপদের। গাছ আমাদের না, তাই আমরা কাটবো না। আমি এসব বিষয় জানি না।’

রাজৈর উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান খান এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমরা গাছ কাটার কথা কেউ বলিনি, তবে আমরা সরজমিনে গিয়ে, কৃষি অফিসের ভবন থেকে ৩ ফিট রেখে রাস্তা করার কথা বলেছি। আমরা কোনো গাছ কাটতে বলিনি কাউকে।’

জানতে চাইলে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রতিদিনের সংবাদকে সোহানা নাসরিন বলেন, ‘আমার গাছ কাটার বিষয়টা জানা নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close