রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

  ০৯ অক্টোবর, ২০১৮

আজ বিশ্ব ডাক দিবস

গৌরীপুরে ডাকসেবা বেহাল

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শাখা ডাকঘরগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। পাকা ভবন থাকলেও কিছু ডাকঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। সৌরবিদ্যুৎ থাকলেও অধিকাংশগুলোতে রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি। ই-ডাক সেবার সাইনবোর্ড থাকলেও অধিকাংশ ডাকঘরে মিলছে না সেই সেবা। লোকবল সংকট থাকায় অনেক ডাকঘরের পোস্টমাস্টারকেই পিয়নের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জানা গেছে, বর্তমানে শাখা ডাকঘরের একজন পোস্ট মাস্টার প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা বেতন পান, যা দৈনিক ভিত্তিতে দাঁড়ায় মাত্র ৮৫ টাকা। একাধিক পোস্টমাস্টারদের অভিযোগ, প্রতি মাসে ডাকঘরে অফিস খরচ দেয়া হয় মাত্র ১৩ টাকা। এখানে কর্মরত কর্মচারীরা পাননা কোনো উৎসব ভাতাও।

গৌরীপুর উপজেলা ডাকঘর সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ডাকসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য উপজেলার ভবানীপুর, ডৌহাখলা, শাহগঞ্জ, মুখোরিয়া, কেল্লাতাজপুর, গৌরীপুর আর এস, বীরআহাম্মদপুর, ভুটিয়ারকোণা, লামাপাড়া, মাওহা, গিধাউষা, পাছার, রামগোপালপুর, নাহড়া গ্রামে ১৪টি শাখা ডাকঘর রয়েছে। প্রতিটি ডাকঘরে পোস্টমাস্টার, রানার ও পিয়নসহ তিনজন কর্মচারীর পদ রয়েছে। ডাকঘরগুলো থেকে চিঠি রেজিস্ট্রি, পার্সেল, ইএমও, খাম, ডাক টিকিট ও রাজস্ব টিকিট বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরণের সেবা দেওয়া হয় গ্রাহকদের। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল, আসবাবপত্র ও আধুনিক প্রযুক্তি সংকটের কারণে এখানে প্রয়োজনীয় ডাকসেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন কর্মরত কর্মচারীরা। এরমধ্যে রামগোপালপুর ও ভবানীপুর ডাকঘরে পিয়ন না থাকায় পোস্টমাস্টারকেই চিঠি বিলি করতে হয়। এদিকে, কয়েক বছর আগে ডাকসেবার মান বৃদ্ধি করার লক্ষে শাখা ডাকঘরে ল্যাপটপ, স্কানার, প্রিন্টার ও ইন্টারন্টে মডেম প্রদানসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি প্রদান করে পোস্ট ই-সেন্টার সেবা চালু করেছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৪টি ডাকঘরের মধ্যে ডৌহাখলা, শাহগঞ্জ, পাছার, বীরআহাম্মদপুর, রামগোপালপুরসহ ৫টি ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার সেবা চালু রয়েছে। বাকি ৯টি ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার সাইনবোর্ড থাকলেও সেবা পাচ্ছেনা গ্রাহকরা। স্থানীয়রা জানান, পোস্ট ই-সেন্টারের সরঞ্জামাদি বিকল ও কয়েকজন পোস্টমাস্টার সরঞ্জামাদি নিজেদের বাসা-বাড়িতে রেখে ব্যবহার করায় ডাকঘরে গ্রাহকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা ডাক কর্মচারী সমিতির সম্পাদক মহসীন মাহমুদ বলেন, শাখা ডাকঘরে এখন আগের মতো চিঠি আসে না। ইন্টারনেট ও আধুনিক প্রযুক্তি সেবা চালু হওয়ার পর থেকে চিঠি-পত্র ই-মেইলে আদান প্রদান হয়। আর বিভিন্ন প্রতিকূলতায় সরঞ্জমাদি পাওয়ার পরেও অনেক ডাকঘরে পোস্ট-ই সেন্টার সেবা চালু করা যাচ্ছেনা। এ সময় ডাকসেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোসহ চাকরি সরকারিকরণের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা ডাকঘরের পোস্টমাস্টার আব্দুল মজিদ বলেন, চোরের উপদ্রবের কারণে অনেক পোস্টমাস্টার পোস্ট-ই সেন্টারের মালামাল বাড়িতে নিয়ে রেখেছে। আর যেসব ডাকঘরে এসব সেবা দেয়া হচ্ছেনা সেগুলো খোঁজ নিয়ে চালু করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close