পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

  ০৮ অক্টোবর, ২০১৮

পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠছে গোলপাতার চাষ

খুলনার পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতার বাগান গড়ে উঠেছে। কপোতাক্ষ নদের তীরে কর্দমাক্ত মাটিতে গড়ে ওঠা গোলপাতা বাগান দেখলে মনে হয় এটি মিনি সুন্দরবন। পতিত জমিতে গড়ে ওঠা গোলপাতা বাগান থেকে প্রতি বছর ১৪-১৫ হাজার টাকার গোলপাতা বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর চরে বিচ্ছিন্নভাবে গোলপাতা গাছ জন্ম নিলেও একমাত্র মোসলেম উদ্দীনের জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের পাশে রাড়–লী গ্রামের মোসলেম আলী সরদারের একটি গোলপাতার বাগান রয়েছে। কর্দমাক্ত পতিত এক বিঘার বেশি জমিতে গোলপাতা বাগান গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে গোলপাতা কাটা হয়। বছরে ৪০ থেকে ৫০ পোন গোল আহরণ করা যায়। যার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে মোসলেম আলী জানান, তার দাদার আমল থেকে গোলপাতা বাগান দেখে আসছে। সে সময় প্রায় তিন বিঘা জমিতে গোলপাতা বাগান ছিল। কপোতাক্ষ নদের জোয়ার-ভাটায় গোলপাতা বাগানে পানি ওঠানামা করত। বেড়িবাঁধ হওয়ার পর নদের পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে গোলপাতা আগের মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে না। পতিত জমিতে গড়ে ওঠা গোলবাগান থেকে গোলপাতা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের লোকরা ঘরের চালা তৈরিতে গোলপাতা ব্যবহার করে থাকেন। এ জন্য এ অঞ্চলের গোলপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মূলত সুন্দরবন থেকে আহরণকৃত গোলপাতা এ অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। ৫ বছর বয়সী গোলপাতা গাছ থেকে বছরে একবার গোলপাতা কাটা যায়। শুকনো মৌসুমে সাধারণত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে গোলপাতা কাটা হয়। গোলপাতা গাছের মাঝখানে কচিপাতা ও তার চারদিকে দুটি পাতা রেখে সব পাতা কেটে রাখা হয়। গোলফল তালের শাঁসের মতো খাওয়া যায়। এতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, যা চর্মরোগ নিরসনে সাহায্য করে। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা মোসলেম আলীর গোলপাতা বাগান দেখে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও সংরক্ষণের অভাবে সুন্দরবনের গোলপাতা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সুন্দরবনের গোলপাতা গাছ সংরক্ষণের জন্য উপকূল অঞ্চলের নদ-নদীর চরে সরকারিভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। এ অঞ্চলের খালে, বিলে, নদীর তীরে বিচ্ছিন্নভাবে গোলপাতা গাছ জন্মাতে দেখা যায়। পুরো দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার মাটি লবণাক্ত ও পলিযুক্ত হওয়ার কারণে এ এলাকায় গোলপাতা গাছ বেশি জন্মায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close