বাকৃবি প্রতিনিধি

  ০৪ অক্টোবর, ২০১৮

বাকৃবি থেকে নিখোঁজ খুকুবি ভিসির ছেলে

গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিদিনের সংবাদ প্রত্রিকায় ‘চৌহালীতে তীররক্ষা বাঁধে ভাঙন, ১৮ বসতবাড়ি বিলীন’ শিরোনামে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে টনক নড়েছে প্রশাসনের। যমুনার ভাঙনে ৫০০ মিটার এলাকা মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায় ১৮টি পরিবারের বসতি ও ঘরবাড়ি।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোড়ার গাড়িচালক তাহের, দোকানি আবু সাঈদ, বৃদ্ধা আকলিমা খাতুন জানায়, আমরা শুধুমাত্র পরিধানের বস্ত্র ছাড়া সংসারের কোনো কিছুই সরাতে পারিনি। আজ আমরা সব হারিয়ে পথে বসেছি। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর কোরবান আলী বলেন, ‘বাবারে ৯ বার বাড়ি গিলা খাইছে যমুনা। এহুন আমি পথের ফকির। কোনে যামু, কোনে থাকমু, আর কী খামু বাবা আল্লাই জানে।’

এ ব্যাপারে ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) আনিসুর রহমান জানান, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি পরিবারের মাঝে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রতিটি পরিবারকে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, চিনি, লবণ, মুড়ি, চিঁড়া, বিস্কুট, দিয়াশলাই প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়াও প্রতিটি পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। তিনি আরো জানান, ২১০ বর্গকিলোমিটারের এই চৌহালী উপজেলার এখন মাত্র ২০ কিলোমিটার আছে। বাকি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

উপজেলার অনেক সরকারি অফিস ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সব কর্মকান্ড স্থানীয় কলেজের একটি কক্ষে করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় স্কুল, কলেজ, পাড়া-গ্রাম যেমন বিলীন হয়েছে যমুনাগর্ভে তেমনি পুলিশ স্টেশন, ব্যাংক-বীমা থেকে শুরু করে অনেক প্রতিষ্ঠান ধসে পড়েছে। ফলে কাজে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষরা নৌকাযোগে উপজেলায় এসে প্রয়োজনীয় কাজ তো দূরের কথা অফিসও খুঁজে পায় না।

এ ব্যাপারে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানায়, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ১২২ কোটি টাকার কাজ ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু করে তা গত বছর শেষ হয়। আর বাঁধটির নিম্নমানের কাজ ও তদারকি যথাযথ না হওয়ায় ধসে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার সাবেক মন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাফর, সদস্য রফিকুল ইসলাম গনি, ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) আনিসুর রহমান, পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময়ে প্রতিটি পরিবারকে জেলা পরিষদ থেকে ১০ হাজার টাকা ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ভাঙনের শিকার দক্ষিণ জোতপাড়া গ্রামের আরো ১৬ জনের মাঝে টাকা এবং বস্ত্র প্রদান করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close