নুর ইসলাম নয়ন, দিনাজপুর

  ০৩ অক্টোবর, ২০১৮

দিনাজপুর রেলস্টেশন

প্ল্যাটফরমের অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগে যাত্রীসাধারণ

দিনাজপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। স্টেশন এলাকায় যত্রতত্র যানবাহন, ময়লা-আবর্জনার স্তুূপ করে রাখা এবং নানা অব্যবস্থাপনায় যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ পড়েছেন। স্টেশনে ওয়েটিং রুমে হিজড়া, ফকির ও মাতালদের উৎপাতে অতিষ্ট যাত্রীরা। যাত্রী সাধারণের ব্যবহৃত সরকারি টয়লেটটিতে সুইপার দিয়ে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব অব্যবস্থাপনা যেন দেখার কেউ নেই।

যাত্রীদের অভিযোগে সরেজমিন স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্টেশনে ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, ঠেলাগাড়িসহ নানা ধরনের যানবাহনে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। রেলস্টেশনে সব প্রকার যানবাহন চলাচল নিষেধ থাকলেও তা রোধ করা মোটেও সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন ধরনের মালামাল আনা নেওয়া থেকে শুরু করে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে সঙ্গেই লোড-আনলোড করা হচ্ছে। স্টেশনে কর্তব্যরত মাস্টার ও কর্মচারীদের সামনেই বখাটে যুবক ও কতিপয় লোক প্রতিনিয়ত প্ল্যাটফর্মে উঠে এসব যানবাহন নিয়ে যাতায়াত করছে। তাদের বারন করার কেউ নেই।

দিনাজপুর স্টেশন নিরাপত্তা ও বাউন্ডারি থাকার কারনে নিয়ন্ত্রিত থাকলেও স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যত্রতত্র যানবাহনের ছড়াছড়ি দেখা যায়। এ ছাড়াও স্টেশনের ওয়েটিং রুম ও টয়লেট সমুহে শোচনীয় অবস্থা ধারণ করেছে। সরকারিভাবে দিনাজপুর রেলস্টেশনে সুইপার নিয়োগ থাকলেও সুইপার তার দেশের বাড়িতে শুয়ে থাকে। এই সুইপারের বেতনের টাকা রেল সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারী স্টেশন মাস্টারেরা ভাগাভাগি করে নেয় বলে খবর যাওয়া যায়। ফলে বেসরকারি সুইপারকে দিয়ে সম্মানিত যাত্রীদের সরকারিভাবে ব্যবহৃত টয়লেটটি অবৈধভাবে যাত্রীদের নিকট ১০ টাকা ও ৫ টাকা করে, যা গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। নানাভাবে যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে লালমনিরহাট ডিটিএসকে অবগত করা হলে, তারা দুই দিনের জন্য নিয়োগকৃত সুইপারকে দিনাজপুরে পাঠালেও পরবর্তীতে আবারও সুইপার তার নিজ বাড়িতে চলে যান। ফলে যাত্রীদের সঠিকভাবে বসা ও সৌচাগার ব্যবহারে সুব্যবস্থা নেই বললেই চলে।

স্টেশন যাত্রীরা বলেন, প্ল্যাটফর্মের ভেতর যানবাহন চলাচলে বিধি নিষেধ থাকলেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের বিচরণ দেখা যায়। স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের লোকজন কেউ এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করেননি। ফলে অব্যবস্থাপনায় স্টেশনে যাত্রীদের ভোগান্তি লেগেই আছে। এসব বিষয়ে যেন দেখার কেউ নেই।

স্টেশন জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর আনাগোনা দেখা গেলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

কয়েকজন চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ স্টেশন থাকলেও এখানকার প্ল্যাটফর্মে প্রতিনিয়ত নানা ধপ্রণর যানবাহন নিয়ে বখাটেরা আড্ডা বসায়। মোটরসাইকেল নিয়ে প্ল্যাটফর্মের ওপরে এসে স্টেশন মাস্টারের রুমের সামনে রেখেই তারা কাজ সেরে নেয়। কেউ তাদের বাধা দেয় না। এতে নারী-শিশু থেকে শুরু করে যাত্রীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন হওয়ায় আমরা বাধা দিলে কেউ শুনে না। তবে আমরা যথাসাধ্য রোধ করার চেষ্টা করছি।’

অভিযোগ বিষয়ে দিনাজপুর জিআরপি থানার ওসি আবদুল হালিম খান বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী ও টিকিট কালোবাজারিদের ধরেছি এবং জেলহাজতে প্রেরণ করেছি। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি এ সব বিষয় কমিয়ে আনার জন্য।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close