নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় কোটি টাকার পৈত্রিক সম্পত্তি ছেড়ে অসহায় শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পৈত্রিক সম্পত্তির দাবি করতে গিয়ে একাধিকবার সন্ত্রাসীদের হামলার শিকারও হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, জাকাত ভূঁইয়া নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জাল দলিলের মাধ্যমে তাদের রেকর্ডিও পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে আছে। এতে করে নিজেদের সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও তারা ছিন্নমূল অবস্থায় বসবাস করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাড়াড়িয়াপাড়া নামক গ্রামে সাবুদ্দিন, আবদুল মালেক, মতি আলী, চান্দু বিবি ও খাতেনের নেছা পাঁচজনের নামে ১১৩ শতাংশ সম্পত্তি তাদের ওয়ারিশগণ ভোগদখল করে আসছিল। পরবর্তীতে ওই গ্রামের জাকাত ভূঁইয়া নামে এক প্রভাবশালী ‘ভুয়া দাতার’ কাছ থেকে দুটি জাল দলিলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ১১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে তা দখলে নিয়ে নেয় এবং জমির মূল মালিকের ওয়ারিশদের জমি থেকে বিতারিত করে দেয়। এ বিষয়ে মৃত চান্দু বিবির ছেলে ফরহাদ মিয়া প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, গত ২৫ বছর ধরে জাকাত ভূঁইয়া আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে যেতে বাধা প্রয়োগ করে আসছে। তিনি নাকি আমাদের সম্পত্তি কিনে নিয়েছেন। অথচ আমাদের পূর্বপুরুষরা এই সম্পত্তি কারো কাছে বিক্রি করেনি। অপরদিকে মৃত খাতনের নেছার ছেলে নরুল ইসলাম জানান, এটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। যা সিএস, আরএস পর্যায়ও আমাদের নামে এসেছে। জাকাত ভূঁইয়া টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমাদের সম্পত্তিতে যেতে দিচ্ছে না। আমরা নিজেদের সম্পত্তি রেখেও আজ অন্যের জায়গায় (ভাড়াটিয়া হয়ে) বসবাস করছি। তিনি আরো অভিযোগ করেন, জাকাত ভূঁইয়া পৌর ভূমি অফিসে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে আমাদের সম্পত্তি তার নিজের নামে খারিজ করে নিয়েছে। আমরা ওয়ারিশগণ ওই খারিজ বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আবেদন করেছি। আশা করছি আমরা ভূমি দস্যুর কবল থেকে সম্পত্তি ফিরে পাব। এ ব্যাপারে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল হক রোমেলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গ্রামবাসীর সঙ্গে জাকাত ভূঁইয়ার জমি নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। তবে এ বিষয় নিয়ে কেউ আমার কাছে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে জাকাত ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার ছোট ছেলে জাহিদ ভূঁইয়া বাবার অসুস্থতার কথা বলে তিনি জানান, কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাই-বাচাই করেই আমরা সম্পত্তিটি ক্রয় করেছি। এখানে কারো ওপর জোর করা হয়নি। অভিযোগকারীরা যা বলছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

"