মামুন আহম্মেদ, বাগেরহাট

  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

চিতলমারীর মধুমতি নদীতে ভাঙন ঝুঁকিতে ঢাকা-পিরোজপুর মহাসড়ক

নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় মধুমতি নদীর ভাঙনে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে দোকানপাট, বসতবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি। ভাঙনে কবলে পড়েছে ঢাকা-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি। গত ৪ দিনের ভাঙনে উপজেলার মধুমতি-সংলগ্ন শৈলদাহ বাজার, আশপাশের অসংখ্য দোকানপাটসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে ঢাকা-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কিছু অংশ নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা চরম হতাশায় ভুগছেন। অবিলম্বে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা না করলে অচিরেই এ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. লুৎফর রহমান ও তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে জরুরী ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মধুমতি নদীর উপচে পড়া ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধের মাটি নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এতে ভাঙন দিনদিন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে নদী ভাঙনে শৈলদাহ বাজার, লেখয়াঘাটসহ আশপাশে বেশকয়টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অব্যাহত এ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শৈলদাহ বাজার ও ঢাকা-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি এখন ঝুকির মধ্যে রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়ি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। পৈত্রিক বসত-বাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা বাঁচার তাগিদে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে রাস্তার পাশের খাস জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ঘটনায় বিগত ১০বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।

শৈলদাহ খেয়াঘাটের দোকান মালিক রোকা মিয়া সরদার, বাজারের সেনেটারী দোকান মালিক সাহাদাৎ খান জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই আকস্মিক ভাবে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই তাদের প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। াজারের গ্রাম চিকিৎসক মো. আ. সোবাহান জানান, ২০১৭ সালে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি নদীতে চলে গেছে। পরবর্তীতে তিনি পার্শবর্তী স্থানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও সেটি নিয়ে আতংকে রয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ শৈলদাহ বজারের রবিউল শিকদার জানান, বিগত ৩৮ বছরের মধ্যে এখানকার প্রায় অর্ধশত ঘর-বাড়ী, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মধুমতির গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। শুধু আশ্বাসের বাণী শুনে আসছি কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনো কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে এ বাজারকে কোন ভাবে আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এখানকার খেয়াঘাটটি এখন চরম হুমকির মুখে। এই ঘাট থেকে প্রতিদিন গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, কোটালীপাড়া ও পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শত শত মানুষ পারাপার হয়। বর্তমানে ভাঙনের কবলে পড়ে খেয়া পারাপারের সময় নানা রকমের দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু সাঈদ জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে ভাঙন রোধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close