আল মামুন জীবন, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও)
১০ দিনের শিশুকে ফেলে গেলেন মা!
স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের খরচ আদায় করার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ১০ দিনের কন্যাশিশুকে এক গ্রাম পুলিশের বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে রেখে চলে গেছেন মা। গত রোববার সকালে উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের বাঙ্গাটুলি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবার দুপুরে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত নবজাতক শিশুটি গ্রাম পুলিশের বাড়িতেই আছে।
উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করছেন ওই নবজাতকের মা রেহেনা বেগম। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করে জাহাঙ্গীরের দাবি, বিয়ের কিছু দিন পর রেহেনা নিজেই তাকে তালাক দিয়েছেন। সে হিসেবে রেহেনা এখন তার স্ত্রী নয়, শিশুটিও তার নয়।
রেহেনা বেগম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, দীর্ঘ এক বছর যাবৎ রাত্রে ডিউটি করার ফাঁকে আমার সঙ্গে রাত কাটায় জাহাঙ্গীর। আমি অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে আমাকে বিয়ে করে তিনি। গত দুইমাস ধরে আমার ভরণ-পোষণের খরচ, এমনকি আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সে।’ তিনি আরো বলেন, ‘১০ দিন আগে সন্তান প্রসবের পর আমি একেবারে অসহায় হয়ে পড়ি। বাচ্চাসহ স্বামীর বাড়িতে থাকার চেষ্টা করলেও আমাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয় আমার স্বামী ও তার প্রথম স্ত্রী। এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বাচ্চা ফেলে চলে আসি।’ জানতে চাইলে গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আলম বিয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিয়ের পর আমার কথা মানতেন না রেহেনা বেগম। এমনকি ১৫ মে আমাকে এফিডেভিট মূলে তালাক দিয়েছে। ডাকযোগে তালাকের কাগজপত্র পাওয়ার পর ভরণ-পোষণের খরচ বন্ধ করে দেই আমি।’
তালাকের বিষয়ে জানতে চাইলে রেহেনা বেগম জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তার কাছ থেকে অন্য একটি জমি সংক্রান্ত মামলার আপোষ মীমাংসার কথা বলে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন জাহাঙ্গীর। পরে সেটি তালাক নামা হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছেন।
ভানোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওহাব সরকার বলেন, বাচ্চা ফেলে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ. মান্নান বলেন, বাচ্চাটি নিয়ে গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আমার দফতরে এসেছিল। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে বর্তমানে বাচ্চাটির একটি সুব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সাথে বিষয়টি দ্রুত মীমাংসা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
"