দিনাজপুর প্রতিনিধি

  ১৮ আগস্ট, ২০১৮

পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন দিনাজপুরের কৃষক

দিনাজপুরে পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে সোনালি আঁশ পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন কমছে।

জানা যায়, দিনাজপুরে ৬০ এর দশকে বিভিন্ন এলাকায় পাট ক্রয় কেন্দ্র ছিল, আবার বড় বড় জুট মিলের চাহিদা পূরণে কৃষকরা পাট চাষে ব্যাপক লাভবান হতো। অপরদিকে ক্রয় কেন্দ্রগুলো পাট সংগ্রহ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করত। ফলে ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নিয়ে কৃষকরাও ঝুকে পড়ত পাট চাষে। কিন্তু বিভিন্নœ কারণে দিন দিন সেই পাট চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন দিনাজপুরের পাট চাষিরা। খাল-বিলে পানি নেই এটাই প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে পাটের দরপতন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও পাট ছড়ানো পানির অভাবে কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

এক বিঘা জমিতে প্রায় পাঁচ মণ পাট উৎপাদন হয়। আর প্রতি মণ পাট সর্বোচ্চ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ ক্ষেত্রে বাজারমূল্য হিসাবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এদিকে, গত কয়েক বছরে ধরে ভাসমান মানুষরা তীরের খাস জমি দখল করে বালু ভরাট করে বসবাস করছে। ছোট-বড় অনেক খাল ভরাট করার ফলে কৃষকের জমিতে পানি আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়, যে কারণে পাট চাষিরা পাট চাষের প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন।

অনেক চাষি জানান, পাটের তৈরি আসবাবপত্রের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। অপরদিকে প্লাস্টিক এবং পলিথিনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা শক্তি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ২ হাজার ২৭১ হেক্টর জমিতে দেশি, তুষা, কেনাফ জাতীয় পাট চাষ হয়েছিল। এ বছর ১ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ কমে দাঁড়িয়েছে ৫০৭ হেক্টরে।

কৃষক মোক্তার বলেন, বর্তমান সময়ে পাট চাষ করতে যে পানির প্রয়োজন তা পাই না। পাট কেটে পচনের পানিরও খুব অভাব।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল জানান, খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে চাষকৃত জমিতে প্রয়োজনীয় পানি এবং পাট পচনের জন্য পানিও কম পাচ্ছেন কৃষকরা। যার কারণে কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close