সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বকেয়া পরিশোধের দাবি
সরিষাবাড়ী আলহাজ জুট মিলে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ২৫
জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার আলহাজ জুট মিলের বকেয়া পরিশোধের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে শ্রমিক, পথচারী ও পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়। পরে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতারা সভা করে বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আলহাজ জুট মিল শ্রমিকরা জানায়, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রায় ৯০ লাখ টাকা বকেয়া রেখে গত ২১ জুলাই কর্তৃপক্ষ মিলটি বন্ধ করে দেয়। মিল চালু ও বকেয়া পরিশোধে শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবির প্রতি কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া না দেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে মিলের সহস্রাধিক শ্রমিক মিলগেটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। পরে তারা মিছিল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মোড়ে টায়ারে অগ্নিসংযোগ এবং জামালপুর-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি প্রধান সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অবরোধ চলাকালে জেলার সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগের এ রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন ও যমুনা সার কারখানার পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা ও জামালপুরের রিজার্ভ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠি চার্জ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ বাধে।
জুট মিল সিবিএর সম্পাদক জাহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘পুলিশের লাঠি চার্জে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন সিবিএর কোষাধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, শ্রমিক আবুল, লাইলি, জাহানারা, মালেকা, জরিনা ও শান্তি।’
দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মাঠে সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, আলহাজ জুট মিলের সিবিএ সম্পাদক জাহিদুর রহমান প্রমুখ। এ সময় ইউএনও সাইফুল ইসলাম, ওসি মাজেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। নেতারা আগামী রোববার মালিক পক্ষের সঙ্গে ঢাকায় বসে বকেয়া পরিশোধে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
সরিষাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহব্বত কবীর জানান, ‘বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ইট-পাটকেলের আঘাতে কনস্টেবল তাসলিমাসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।’
"