রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ১৪ আগস্ট, ২০১৮

রানীনগরে একটি সেতুর অভাবে ৭ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার শেষ প্রান্তে ঘোষগ্রাম নামক স্থানে ছোট যমুনা নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা নৌকা। এই নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন ১১ গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিবাহিত হলেও ছোট যমুনা নদী পারাপারের আজও কোনো সেতু নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজর শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ঘোষগ্রাম নামক স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, নান্দাইবাড়ি ও বেতগাড়ী ও পার্শ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়ারীগ্রাম, শলিয়া গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষের বসবাস করে। এ এলাকায় যোগাযোগের তেমন কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় জরুরি সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এ গ্রামের মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে এসে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর আজও কোনো ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।

একটি ব্রিজের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কখনো নৌকা আবার কখনো বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হয় প্রায় ১১টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার হলেও শুকনো মৌসুমে এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি থই থই করে। তখন পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় চালিত নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বিলের পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই ওই গ্রামের মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।

ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর দিয়ে পারাপারের জন্য নৌকার ওপরই ভরসা করতে হয় গ্রামবাসীদের। রানীনগর ও পার্শ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার ওই গ্রামগুলোতে সবচেয়ে বেশি ইরি ধান উৎপাদন হয়। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোনো পথ না থাকায় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই ফড়িয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর দাবি থাকলেও কারো যেন মাথা ব্যথা নেই।

এ ব্যাপারে ঘোষগ্রামের মো. আবদুল মান্নান ও আন্ধারকোটা গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হয়ে আসছি। বছরের পর বছর ধরে কৃষিপণ্যের নায্য মূল্যসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ঘোষগ্রাম ও আন্ধারকোটা নামক স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হোক। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে জরুরি ভিত্তিতে এখানে যেন একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।

এ ব্যাপারে রানীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান মিঞা বলেন, ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে নদী পারাপারের একটি ব্রিজ প্রয়োজন। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close