কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার)

  ২৩ জুলাই, ২০১৮

ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা

উখিয়ার সাগর উপকূলে কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি

উখিয়ার সোনারপাড়া থেকে মনখালী পর্যন্ত ৫ শতাধিক ফিশিং বোটে কারেন্ট জাল ব্যবহারের অভিযোগ

চিংড়ী পোনা আহরণের নামে উখিয়ার সাগর উপকূলীয় এলাকায় অভিনব কায়দায় বসানো হয়েছে মশারির নেট। গভীর সাগরেও জেলেরা মাছ ধরার জন্য ব্যবহার করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জাল। বাঁশের খুঁটি পুঁতে বসান এই জালে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ নিধনের পাশাপাশি, পোনা শিকারীর পাতানো জালে ধ্বংস হচ্ছে মাছের পোনা। উখিয়ার সোনার পাড়া থেকে মনখালী পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ফিসিংবোটে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হচ্ছে অভিযোগ আছে।

সাগরের বড় মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী সচেতন মহল। এভাবে পোনা ধ্বংসের ফলে সাগরে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে বলে স্বীকার করছেন জেলেরা। তবে মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, তারা কারেন্ট জাল উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকা সোনার পাড়া, ইনানী, ঘাটঘর, নিদানিয়া, পাঠোয়ার টেক, বাইলাখালী, ছেপটখালী, মাদারবনিয়া ও মনখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফিসিংবোট থেকে কারেন্ট জালে আটকাপড়া মাছ নামিয়ে জেলেরা পৃথকীকরণের কাজে ব্যস্ত। এভাবে সোনার পাড়া থেকে মনখালী পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ফিসিংবোটে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে জেলেরা সংবাদ কর্মী দেখে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। পরে দোষ চাপাতে অকপটে শিকার করেন। তারা বলেন, কারেন্ট জাল দিয়ে সাগর থেকে মাছ আহরণ বাবদ প্রতি মাসে স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীকে টাকা দিতে হয়। ফিসিংবোটের মাঝি আশরাফ আলী জানান, গভীর সাগরেও এখন বড় মাছ মিলছে না। তাই পরিবার পরিজনের জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে কারেন্ট জাল দিয়ে ছোট মাছ ধরতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এ মাছ প্রতিমন ১৪শ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। যা দিয়ে জেলেদের খরচও পোষাবে না। স্থানীয়দের অভিমত, উখিয়ায় রোহিঙ্গা বিষয়টি আলোচিত হওয়ায় আরো অনেক অবৈধ কাজ রোধে ঠিক মতো মনিটর হচ্ছে না। এই সুযোগে সাগরে মাছের পোনাও নিধন হচ্ছে দেদারছে।

এদিকে সাগর উপকূলীয় এলাকায় প্রতিষ্ঠিত প্রায় অর্ধশতাধিক হ্যাচারি প্রতিষ্ঠান চিংড়ি পোনা আহরণের জন্য সাগর নির্ভর হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পরিবেশবাদী যুব ও শিক্ষক আদনান অভিযোগ করে জানান, হ্যাচারি শিল্প মালিকেরা পোনা সংগ্রহের জন্য আগাম দাঁদনের টাকা দিয়ে সাগর উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে লেলিয়ে দিয়েছে। তারা উপকূলের চর এলাকায় মশারির নেট বসিয়ে জোওয়ার ভাটার জন্য চর এলাকায় উৎপেতে বসে থাকে। জোয়ার-ভাটা গেলে মশারির জালে আটকাপড়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাগুলো ফেলে দিয়ে শুধু মাত্র চিংড়ি পোনাগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। এভাবে পোনা ধ্বংসের ফলে সাগরে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে বলে জেলেদের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে। কারেন্ট জাল ব্যবহারের নেপথ্যে টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচাজ এস আই আনিছুর রহমান। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ এরশাদ বীন শাহিন বলেন, তারা বিভিন্ন সময়ে সাগর উপক’লে অভিযান চালিয়ে ২৪ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে পেলেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist