রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

  ২১ জুলাই, ২০১৮

রানীশংকৈলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর কাজ শেষের আগেই বিল উত্তোলন

কাজ শেষ করার আগেই ভাউচার দেখিয়ে বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংস্কারে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ সম্পন্ন না করেই বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক বরাদ্দকৃত পিইডিপি-৩ এর প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে জরাজীর্ণ বিদ্যালয় সংস্কার বাবদ উপজেলার জিপি, বাচোর, রওশুনপুরসহ মোট ৪টি সরকারি বিদ্যালয়ের জন্য মোট ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে ভাউচার জমা করে বিল উত্তোলনের বিধান রয়েছে। কিন্তু তার আগেই বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ২টি প্রকল্পের বিল ভুয়া ভাউচার জমা করে উত্তোলন করা হয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পের বিলটি প্রধান শিক্ষকদের নিকট কাজ করার আগেই ভাউচার জমা নিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

তালিকাভুক্ত বাচোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহেষ চন্দ্রের গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে জানান, তিনি বরাদ্দের অর্থ এখনো পাননি। গত ৮ দিন ধরে ওই বরাদ্দের অনুকূলে নিজ অর্থ ব্যয় করে কাজ করছি, কিন্তু শিক্ষা অফিস বলেছে খুব শিগগির আমাকে বিল দেবে।

একইভাবে পিউডিপি-৩ এর প্রকল্পে উপজেলার অনন্তপুর, রাজোর, মাধবপুরসহ মোট ১০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট মেরামতের জন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ের অনুকূলে ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দের বিল কাজ সম্পন্ন না করেই উত্তোলন করা হয়েছে। তবে এ বরাদ্দের খবর যেসব বিদ্যালয়ের নামে এসেছে তার বেশিরভাগ প্রধান শিক্ষক জানেন না বিল উত্তোলনের বিষয়টি। এ নিয়ে অনন্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর ইসলামের বলেন, টয়লেট মেরামত বাবদ আমার বিদ্যালয়ে অর্থ বরাদ্দ আছে তা আমি জানি না। অন্যদিকে, টয়লেট মেরামত বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যাপারে কিছুই জানেন না পারকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন। রাতোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর ইসলামের সঙ্গে গত রোববার মুঠোফোনে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে বরাদ্দের বিল উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে, ক্ষুদ্র মেরামতের জন পিইডিপি-৩ প্রকল্পে ক্ষুদ্র বাঁশবাড়ী, গাগংগুয়া, রাজোরসহ মোট ১৭ বিদ্যালয়ে এক লাখ টাকা করে মোট ১৭ রাখ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দের অর্থও কাজ করার আগেই উত্তোলন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে একাধিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরাদ্দের খবর আমরা জানি আমাদের নিজ অর্থ ব্যয় করে আমাদের মেরামত কাজ করতে বলে ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। আমরা সে মতে, কাজও করেছি। তবে এখনো বিল পাইনি। বলদ্বানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালিদা বানু বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ২ মাস আগে নির্দেশনা পেয়ে আমি কাজ করেছি। তবে বিল এখনো পাইনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, বরাদ্দের অনুকূলে প্রত্যক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ১২ হাজার টাকা করে উৎকোচ আদায় করছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরী। এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বদলিবাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম পুতুল শিক্ষা অধিদফতরসহ বিভিন্ন দফতরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন।

তবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরীর হজ পালনে সৌদি আরব যাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম মুঠোফোনে বলেন, বরাদ্দের সমস্ত অর্থ উত্তোলন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের ব্যাংক হিসাব নম্বরে রাখা হয়েছে। কাজ দেখে তাদের বিল প্রদান করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist