মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
সৈয়দপুরে নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম। নিম্ন মানের এসব আইসক্রিম খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে কোমলমতি শিশুসহ সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই স্থাপিত আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পকেট ভারি করলেও মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
গতকাল বুধবার শহরের বাঁশবাড়ি টালি মসজিদ সংলগ্ন মধু আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে গিয়ে দেখা গেছে ফ্যাক্টরির মালিক আফতাব উদ্দিন একটি গামলায় মেশাচ্ছেন ক্ষতিকারক রং, যা দিয়ে তৈরি করা হবে আইসক্রিম। সিমেন্টের তৈরি একটি বড় হাউসে রয়েছে লবণ মেশানো পানি ও বাঁশের নোংরা কাঠি। অন্য আরেকটি হাউসে রয়েছে তিনদিন আগের লবণ ও সেকারিন মেশানো পানি। ওই পানি দিয়ে তিনি তৈরি করছেন আইসক্রিম। ফ্যাক্টরিতে কাজ করা শ্রমিকদের গা বেয়ে ঘাম মিশছে সেই পানিতে। একই এলাকার সোনার বাংলা আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে গিয়েও একই অবস্থা দেখা যায়।
জানা গেছে, তৈরি করা আইসক্রিমগুলো বিক্রি করা হচ্ছে শহরের অলিগলি ও উপজেলার হাট-বাজারসহ স্কুল কলেজের সামনে। প্রতিটি আইসক্রিম বিক্রি করা হচ্ছে ২ থেকে ৫ টাকা করে। প্রচন্ড তাপদাহে শিশুসহ বড়রাও তৃষ্ণা মেটাতে এই আইসক্রিম খাচ্ছে। অনেকই আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়েরিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে।
মধু আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক আফতাব ও সোনার বাংলা ফ্যাক্টরির মালিক মমতাজ বলেন, আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো অপরিষ্কার নয়। মাসে একদিন হলেও পরিষ্কার করা হয়। কী কী বৈধ কাগজপত্র আছে জানতে চাইতে তারা বলেন, কাগজের কোনো দরকার তাদের পড়ে না। কর ও ভ্যাট অফিসসহ সেনিটারি বিভাগের লোকজনদের হাতে রাখলেই হয়। কীভাবে তাদের হাতে রেখেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, ওইসব অফিসের লোকজন এলেই তাদের এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিলেই সব পার। মাসে কত টাকা ইনকাম করেন জানতে চাইলে তারা বলেন, তেমন একটা হয় না। সংসারের খরচ শেষে ৫০-৬০ হাজার টাকার মতো প্রতি মাসে জমা করতে পারেন তারা। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেন কেন জানতে চাইলে বলেন, সরকার কী তাদের দেখতে আসবেন। যাদের প্রতিমাসে টাকা দেওয়া হয় তারাই তাদের সরকার।
সেনিটেশন বিভাগের কর্মকর্তাকে না পেয়ে কথা হয় ভ্যাট অফিসের ইন্সপেক্টর সোহেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, আইসক্রিম ফ্যাক্টরিগুলো কোথায় তা তিনি জানেন না। ইউএনও বজলুর রশীদ বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরই অভিযানে নামা দরকার।
"