ইমরান হোসেন সুজন, নবাবগঞ্জ (ঢাকা)

  ১৮ জুলাই, ২০১৮

নবাবগঞ্জে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে বর্ষার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার চাহিদা বেড়েছে। ফলে বর্ষার শুরুতেই নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে উপজেলার মিস্ত্রিপাড়ায়। নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্ত নৌকা তৈরিতে। দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। রাত-দিন একটানা কাজ করলেও চাহিদা পূরণে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। উপজেলার হাটগুলো জমে ওঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সরগরমে জমজমাট হয়ে ওঠেছে হাটগুলো।

জানা যায়, বর্ষায় নবাবগঞ্জের প্রায় ১০টি গ্রাম সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত হয়। উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ঘোষাইল, আর-ঘোষাইল, কঠুরী, বালেঙ্গা, রাজাপুর, চারাখালী, তিতপালদিয়া ও কল্যানশ্রীসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষের বর্ষার দিনের একমাত্র বাহন নৌকা। নবাবগঞ্জবাসীর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দোহার ও মানিকগঞ্জের নৌকার চাহিদা পূরণ করেন নবাবগঞ্জের নৌকা তৈরির কারিগররা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখালী ছাড়াও বাগমারা, বেঁড়িবাধের বিভিন্ন স্থানে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।

নৌকার কারিগর ব্রাহ্মণখালীর সুভাষ সূত্রধর বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে বর্ষার সময় নৌকা বানাই। এসব নৌকা নবাবগঞ্জ ছাড়াও পার্শ¦বর্তী মানিকগঞ্জের ঝিটকা বাজারে বিক্রি হয়। বড় নৌকার চেয়ে কোশা নৌকার চাহিদা বেশি। প্রতিটি নৌকা বানাতে ২,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা যায় ৩,৫০০ থেকে ৪,০০০ হাজার টাকায়। আমাদের তৈরি নৌকা ঝিটকা হাটে বেশি বিক্রি হয়।

একই এলাকার কাঠমিস্ত্রী কানাই সূত্রধর বলেন, সারাটা বছর ঘর-বাড়ি মেরামত করি। কিন্তু বর্ষার দুই-তিন মাস আগেই নৌকা তৈরির কাজ করি। বর্ষায় সময় নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। আমরাও অতিরিক্ত কিছু আয় করতে পারি। তবে কাঠের দাম ও জোগালীদের (সহযোগী) মজুরি বেড়ে যাওয়ায় লাভ কম হয়।

বেড়িবাঁধের মৌসুমি নৌকা তৈরির কারখানা করেছেন গৌর মৌজুমদার। তিনি জানান, ১০/১১ জন কাঠমিস্ত্রী দ্বারা কাজ করে প্রতিদিন ৫/৬টি নৌকা তৈরি করা যায়। একটি ছোট নৌকার জন্য ৫/৬ সেফটি কাঠ লাগে, এক সেফটি কাঠের দাম ৩০০ টাকা। সেই হিসাবে একটি নৌকায় ১,৫০০ থেকে ১,৮০০ টাকার কাঠ লাগে। একটি নৌকা বানাতে দুইজন মিস্ত্রীর একদিন লাগে। তাদের দিতে হয় এক হাজার টাকা। সপ্তাহব্যাপী নৌকা তৈরি করে দোহার-নবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটগুলোতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাই।

বান্দুরার কাঠমিস্ত্রী নরেশ সূত্রধর বলেন, বর্ষায় নৌকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের খাওয়া-দাওয়ার সময় থাকে না। তবে পরিশ্রম করলেও লাভ কম। সবকিছুর দাম বেশি। জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের দিনমজুর বিশ্বজিৎ জানান, বর্ষার দিনে স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার প্রভৃতি স্থানে যাতায়াতের জন্য নৌকার ব্যবহার হয়ে থাকে। অভাবের সংসারে নৌকা কেনা দুঃসাধ্য হলেও বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে। বর্ষার শুরুর দিকে নৌকার দাম কিছুটা কম থাকে বলেও তিনি জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist