বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
পঞ্চম শ্রেণির শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
গ্রাম্য সালিশে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় রফা
নাটোরের বড়াইগ্রামে পঞ্চম শ্রেণি পড়–য়া এক শিশু কন্যাকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতবররা এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় রফা করেছে। এই টাকার ৪০ হাজার টাকা গ্রাম প্রধানরা নিজেরাই ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। বাকি এক লাখ ২০ হাজার টাকা নগদ দিতে অপারগতা স্বীকার করায় অভিযুক্ত ধর্ষণকারী সমমূল্যের জমি প্রদানের অঙ্গীকার প্রদান করেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টায় বড়াইগ্রামের গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি গ্রামে স্থানীয় আ.লীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাহফুজ সঙ্গীয় গ্রাম প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে এই বিচার কার্য সম্পন্ন করেন। এর আগে একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় ওই গ্রামের বাহাদুর প্রামানিক (৭০) নামের এক বৃদ্ধ ওই ছাত্রীকে কৌশলে তার ডেকোরেটরের দোকানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। বাহাদুর ওই গ্রামের মৃত এবাদ প্রামানিকের ছেলে।
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী অভিযোগ করে বলে, দাদা-নাতনি সম্পর্কের সূত্র ধরে বাহাদুর ওই বিদ্যালয়ের একই ক্লাসের অন্য এক শিশুকে দিয়ে কিছু কথা আছে বলে তাকে তার ভাই ভাই ডেকোরেটর দোকানে ডেকে নেয়। পরে সবার অগোচরে দোকানের দরজা বন্ধ করে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে জানিয়ে দিয়ে ২০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দেন। কিন্তু সে সঙ্গে সঙ্গে বাজারে এসে তার চাচাকে বলে দেয় এবং তৎক্ষণাত বাজারের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে বৃদ্ধকে হাতেনাতে আটক করে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা তাকে ছোট রেখেই মারা গেছেন। বাবা ঢাকায় থাকেন। ছোট বোনকে নিয়ে সে তার তার দাদীর সঙ্গে বসবাস করছে। স্থানীয়রা অনেকেই জানান, অভিযুক্ত বাহাদুরের আগেও এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। সে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে পারেন না। দুই স্ত্রীসহ বাহাদুর ওই গ্রামে বসবাস করে আসছেন।
আ.লীগ নেতা মাহফুজ বলেন, দুই পক্ষই বিচার নিয়ে আসায় আমি কয়েকজন গ্রাম প্রধানদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি। এক্ষেত্রে ৪০ হাজার টাকা নিজেরাই ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, সব টাকাই ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে দেওয়া হবে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি দীলিপ কুমার দাস জানান, গ্রাম্য শালিসে কখনো ধর্ষণের ঘটনার মিমাংসা হতে পারে না। এ ব্যাপারে থানায় মামলা রুজু করা হবে। ধর্ষক ও সহযোগীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
"