মাসুম হোসেন, শাজাহানপুর (বগুড়া)
শাজাহানপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, নাশকতা, চাঁদা ও তদবীরবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। এসব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী ২০১১ সালে দুপচাঁচিয়া থেকে বদলি হয়ে শাজাহানপুর উপজেলায় আসেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেন। সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন দফতরে হয়রানিমূলক অভিযোগ করেন।
শাজাহানপুরে কয়েকটি বিদ্যালয়ে দফতরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির সদস্য মনোনয়ন এবং বেতন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শিক্ষক বদলির দোহাই দিয়ে তিনি উৎকোচ গ্রহণ করেন। বদলির ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষক টাকা না দিলে তাকে নানাভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ রানার নিকট বদলি বাণিজ্যসহ অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারায় তার বিরুদ্ধেও হয়রানিমূলক মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন তিনি। শাজাহানপুরে প্রাথমিক শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে শিক্ষক জুলফিকার আলীকে অবিলম্বে অন্যত্র বদলি করে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক সমাজ। এ ছাড়াও গত ২১ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন শাজাহানপুরের সাজাপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইতোপূর্বে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, হত্যার হুমকি, সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে বগুড়া ও ঢাকায় প্রায় হাফ ডজন মামলা হয়। এমনকি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট চাঁদা দাবির ঘটনায় বিভাগীয় মামলা হয়। এ পর্যন্ত তাকে তিনবার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে আছেন। সমিতির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় তিনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের রোষানলে পড়েন এবং সাময়িক বরখাস্ত হন।
শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে শিক্ষা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"