গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
গুরুদাসপুরে এক বছরে তিন শিশুসহ ১৩ হত্যাকান্ড
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, প্রতিহিংসা, পরকীয়া, আর লালসার বলি হচ্ছে কোমলমতি শিশু, যুবক-যুবতী ও গৃহবধূরা। পর পর তিন শিশুসহ কয়েকটি হত্যার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত এক বছরে গুরুদাসপুরে তিনটি শিশু, তরুণ-তরুণী, গৃহবধূসহ ১৩টি হত্যাকা-ের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ বলছে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। হত্যারোধে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশা দাখিল মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী খাদিজা খাতুন বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরদিন শিশুটির চাচা মোর্শেদ আলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ তল্লাশি করে খাদিজার কোনো সন্ধান পায়নি। পরে নিখোঁজের দুই দিন পর বাড়ির পাশের পুকুরে বস্তাবন্দী খাদিজার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। খাদিজার বাবা মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রতিবেশী বাদল ভক্তি, তার স্ত্রী নাজমা বেগম, বাদলের ভাতিজা নজরুল ইসলামসহ ছয়জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। আসামিদের গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর খাদিজাকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলার জুমাইনগর মোল্লাবাজার এলাকায় মমতাজ উদ্দিনের দেড় বছরের শিশু আহম্মদ আলী নিখোঁজ হয়। এর দুই দিন পর তাদের বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে চার প্রতিবেশী লিপি খাতুন, মকুল, মজিবর ও কোহিনুরকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ চারজনকে আটক করে।
গত বছরের ৫ মে উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়ার মোহন কুমার ঘোষের শিশু কন্যা দৃষ্টি ঘোষ নিজ বাড়ির সামনে খেলাধুলার সময় হারিয়ে যায়। নিখোঁজের পরদিন প্রতিবেশী প্রদীপ সরকারের বাড়ি থেকে শিশুটির বস্তাবন্দী মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে প্রদীপ সরকার, তার স্ত্রী সন্ধ্যা রাণী এবং তাদের ছেলে হৃদয় সরকারকে আটক করে পুলিশ। গুরুদাসপুর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, হত্যাকা-ের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনাসহ শাস্তি নিশ্চিতের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
"