এনামুল হক বাদশা, সিংড়া (নাটোর)
চলনবিলে চলছে মা মাছ নিধন
বন্যার পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে মৎস্য ভান্ডারখ্যাত নাটোরের চলনবিলে শুরু হয়েছে মা মাছ নিধনের মহোৎসব। বিভিন্ন জলাশয়, নদী-নালা, খাল-বিলে মা মাছ নিধন করছে এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা। তবে জেলেরা মা মাছ ধরে সিংড়া মৎস্য আড়ত এবং বিভিন্ন হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।
সচেতন নাগরিকরা বলছে, চলনবিলের মা মাছ নিধন বন্ধ করা না গেলে আগামী দিনে মাছ সংকটে পড়বে দেশের বৃহত্তম মৎস্য ভান্ডার চলনবিল।
জানা যায়, সিংড়া উপজেলার মৎস্য অভয়াশ্রম দহ, জোড়মল্লিকা, বিলদহর, কৃষ্ণনগর, সারদানগর, পৌর শহরের দমদমা, পাটকোল, কতুয়াবাড়ি, শোলাকুড়া, সোহাগবাড়ি এবং বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে এক শ্রেণির অসাধু জেলে কুঁচ, পাঁচা, বাদাই, কারেন্ট ও খরা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ডিমে পেট ভরপুর বোয়াল, টেংরা, পাতাসী, পুটি, মলা, মাগুরসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ প্রকাশ্যে নিধন করছে। কিন্তু সরকারিভাবে মা মাছ নিধন নিষেধ থাকলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় ওই মাছগুলো সিংড়া মৎস্য আড়ত ও আশেপাশের স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেট ভরা ডিমওয়ালা টেংরা, শিং, বোয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। জানা যায়, উপজেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় মা মাছ রক্ষার্থে দহ ও অভয়াশ্রমে পাহারাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অসাধু জেলেরা মা মাছ নিধন করছে। শুষ্ক মৌসুমে সৌতি, বানা ও খরাজালসহ সব প্রকার জাল ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
সিংড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমরা সম্প্রতি বিলদহরের বানা ভেঙে দিয়েছি। সব সময় পর্যবেক্ষণ করছি। অবৈধভাবে কেউ মাছ নিধন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত ইউএনও বিপুল কুমার বলেন, মা মাছ নিধন বন্ধে মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভিপি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আমরা ইউনিয়নের হাট-বাজারে জনসচেতনমূলক সভা করব এবং লিফলেট বিতরণ করব। মা মাছ রক্ষার্থে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত আছে এবং থাকবে বলেও জানান উপজেলা চেয়ারম্যান। এ বছর কেউ অবৈধভাবে মাছ নিধন করতে পারবে না বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি।
"