গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আ.লীগ নেতার চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ
প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে অসুস্থ আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন আলীর (৫৬) চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকা প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে। ঘটনার পর টাকা ফিরে পেতে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হোসেনের পরিবার। তবে এখনো কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। হোসেন আলীর বাড়ি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের গজন্দর গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত এক সপ্তাহ আগে ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হারুন-অর-রশিদের প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে হোসেন আলীকে শনাক্ত করে অনুদানের টাকা দেওয়া হয়। তবে ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার পরিষদে হারুন-অর-রশিদ নামে কোনো ইউপি সদস্য নেই। প্রতারণার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি শুনেছি।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ২নং গৌরীপুর ইউপি নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে মিছিল করতে গিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে মেরুদ-ে আঘাত পান হোসেন আলী। এরপর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করা হলেও হোসেনের দুটি পা ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। নিরুপায় হয়ে হোসেন আলী প্রধানমন্ত্রী বরাবর আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন। পরে স্থানীয় এমপি নাজিম উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক বিধু ভুষণ দাস ও আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন আলমসহ দলীয় নেতাদের সুপারিশ ও প্রচেষ্টায় চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ হতবিল থেকে এককালীন ৩০ হাজার টাকা অনুদান পায় হোসেন আলী। এদিকে অনদুানের চিঠি প্রাপ্তির পর হোসেন আলীর স্ত্রী মিনারা বেগম ২৮ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন স্বামীর নামে বরাদ্দকৃত টাকার চেক উত্তোলন করে নিয়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক নাজনীন আলম বলেন, হোসেন আলী আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী। তার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদানের টাকা আত্মসাত হয়েছে এই বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। অসুস্থ হোসেন আলীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দাবি জানাচ্ছি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহসীন উদ্দিন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, অভিযোগ ওঠার পর অনুদানের টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"