আবদুল্লাহ আল মামন, মাদারীপুর
মাদারীপুর সওজ’র উদাসীনতা
ফেরিঘাটে নষ্ট হচ্ছে অর্ধকোটি টাকার সম্পদ
অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের অর্ধকোটি টাকার চারটি পন্টুন ও একটি পোল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মাটির নিচে ঢাকা পড়ে মরিচায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফেরির মূল্যবান এই যন্ত্রপাতি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীতে নির্মাণের কারণে অকেজো হয়ে পড়া ফেরির যন্ত্রাংশগুলো নড়াইল জেলার সড়ক বিভাগের প্রয়োজন। তাদের হস্তান্তর করা হলেও তা গ্রহণ না করায় অকেজো পড়ে আছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীতে গোসল করতে বা পানি আনতে গেলে ফেলে রাখা যন্ত্রপাতিতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর আচমত আলী খান (চীনমৈত্রী) সেতু নির্মিত হওয়ার তিন বছর পরে ফেরিঘাটের ফেরিসহ কিছু মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু ফেরিঘাটে অবহেলায় ফেলে রাখা হয় আরো অর্ধকোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুর মহিষেরচর ও কাজিরটেক ফেড়িঘাটে চারটি ফেরির পন্টুন ও একটি পোল অবহেলায় দীর্ঘদিন পড়ে আছে। পোলের অর্ধেকটা পানিতে, বাকি অংশ মাটির ওপর কাত হয়ে পড়ে আছে। চুরি হয়ে গেছে এই যন্ত্রপাতির ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশগুলো। সেতু নির্মাণের প্রায় ৩-৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ফেরির এই মালামালগুলো সরিয়ে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফেলে রাখার মধ্যেও নেই সংরক্ষণের ছাপ। দীর্ঘদিন ধরে কাজিরটেক ফেরিঘাটে তিনটি পন্টুন ও মহিষেরচর ঘাটে একটি পন্টুন ও একটি পোল অবহেলায় অকেজো পড়ে আছে। জং ধরে ক্ষয় হচ্ছে লোহার পাত। নানা জায়গায় তৈরি হয়েছে ছিদ্র। ফলে দিনে দিনে মাটির সঙ্গে মিশে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ফেরি ও কিছু পন্টুন নেওয়ার সময় নদীর পাড় ভাঙন লেগে নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে স্থানীয়রা নদীতে গোসল করা বা পানি আনতে গেলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার ঘটতে পারে। স্থানীয়দের দাবি, নদীর পাড়ে যেন একটি ঘাট তৈরি করে দেন এবং দ্রুত সময়ের ভেতর ফেরির অব্যবহৃত বাকি মালামালগুলো সরিয়ে নিয়ে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলে সরকারের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমবে বলে মনে করেন স্থানীরা।
ঘাট এলাকার ব্যাবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রায় ২Ñ৩ বছর আগে দুই ফেরি ও ৫-৬টি পন্টুন ও পোল নিয়ে যায়। কিন্তু মহিষেরচর ফেরিঘাট ও কাজিরটেক সাবেক গোবিন্দপুর ঘাটসহ মোট চারটি পন্টুন ও একটি পোল রেখে যায়। এদের মধ্যে দুইটি পন্টুন বালুর ও মাটির মধ্যে অর্ধেক ঢেকে যায়। সরকারে এই মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেখারমতো কেউ নেই।
মানবাধিকার কর্মী এইচ এম মাসুম হাওলাদার জানায়, অনেকদিন ধরেই ফেরির মালামালগুলো পড়ে আছে। আচমতআলী খান সেতু হওয়ার পরও প্রায় তিন বছর ধরে ফেরির চারটি পন্টুন ও একটি পোল অযতœ ও অবহেলায় পড়ে আছে। এতে সরকারের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আমি মনে করি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকরর্তাদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট হওয়ার আগেই যেন রক্ষা করা হয়।
মাদারীপুর জেলা সওজ নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুননবী তরফতার বলেন, যেহেতু কাজিরটেক ফেরিঘাটে আড়িয়াল খা নদীর উপর দিয়ে আচমত আলীখান সেতু নির্মিত হয়েছে, সেহেতু অকেজো ফেরিগুলো ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। তবে ফেরি পন্টুন ও পোলগুলো নড়াইল জেলার সড়ক বিভাগের প্রয়োজনীয়তার কারণে তাদের হস্তান্তর করা জন্য ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। তবে নড়াইল সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষ গ্রহণ না করায় আপাত অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
"