হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বিলীন হয়ে যেতে পারে ঐতিহাসিক সাধুর পাহাড়
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদের ঐতিহাসিক সাধুর পাহাড়ে ভয়াবহ ধসের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসের কারণে পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপিত সত্যানন্দ সাধু বাবাজির মন্দিরটি বিধ্বস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ঐতিহাসিক দলিল থেকে জানা যায়, হাটহাজারী-নাজিরহাট মহাসড়কের চৌধুরীহাট বাজারের দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে নির্জন পাহাড়ি জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় সত্যানন্দ সাধু বাবাজি সাধনা করতেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনীর কবল থেকে আত্মরক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে তারা সাধুর পাহাড়ের জঙ্গলে দিনে আত্মগোপনে থাকতেন। রাতে সেখানে সভা করে আন্দোলনের নীতি নির্ধারণ করতেন।
স্থানীয়রা জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বিশাল জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ে সত্যানন্দ বাবাজির মৃত্যুর পর তাকে সেখানে সমাহিত করা হয়। সেই সময় থেকে এটি সাধুর পাহাড় হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিবছর এই সাধকের বাৎসরিক আবির্ভাব ও প্রয়াণ দিবসে মন্দিরে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।
মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকা একাধিক ব্যক্তি সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উঁচু পাহাড়ের বড় এলাকা জুড়ে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে পড়ে এখন মন্দিরটি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঐতিহাসিক সাধুর পাহাড় রক্ষায় সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ ১৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণ করে দেন। এরপর ও মন্দিরের উত্তর পশ্চিম অংশের পাহাড় ধস তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের দুই এক বর্ষা মৌসুমের মধ্যে মন্দিরটি বিলীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আশ্রমে আগত ভক্তরা।
মন্দির পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তা ও চিকনদন্ডী ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. অশোষ কুমার দেব জানান, সাম্প্রতিক সময়ের প্রবল বর্ষণে সাধুর পাহাড়ে বিশাল এলাকা ধসে পড়েছে। আবারও বৃষ্টি হলে বর্ষণের তোড়ে পাহাড়ের মন্দির ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড় ধস রোধ করতে পলিথিন দিয়ে বিধ্বস্ত স্থান ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
"