উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
উখিয়ায় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন
পাঁচ মাস ধরে খুঁড়ে রাখা হয়েছে রাস্তাগুলো
কক্সবাজারের উখিয়ায় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের নামে ৫ মাস আগে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যত্রতত্র ফেলা হয়েছে মাটি, পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। তারপর উধাও হয়ে গেছে ঠিকাদার। ফলে অসহনীয় জনদুর্ভোগে পড়েছে ডেইলপাড়া, পূর্বডিগলিয়া, করইবনিয়া, চাকবৈঠা, গয়ালামারা, টাইপালং, দুছড়ি, হাজিরপাড়া, মাইল্লারকূল, খয়রাতি পাড়া ও মৌলভী পাড়াসহ প্রায় ১২টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। অবিলম্বে এসব গ্রামীণ সড়কগুলোর উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করা না হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে রাজাপালং ইউনিয়নের ৩টি ও রতœাপালং ইউনিয়নের ১টিসহ ৪টি ইট সলিং সড়ক থেকে কার্পেটিং সড়কে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে প্রায় ৮ মাস আগে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ৫ মাস আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এসব সড়কের ভাঙাচোড়া ইটগুলো তুলে নিয়ে যায় এবং সড়ক থেকে ২ ফুট গর্ত করে মাটি খুঁড়ে ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে যায়। চলতি বর্ষা মৌসুমে এসব সড়কে বৃষ্টি পানি কাদা মাটিতে একাকার হয়ে যাওয়ার কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছে ১২টি গ্রামের লক্ষাধিক। কিছু কিছু লোকজন বিকল্প পথে উখিয়া সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হলেও বৃহত্তর গ্রামবাসী ঘরবন্দি হয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে।
রতœাপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী সাংবাদিকদের অভিযোগ করে জানান, কাজ শুরু করে ফেলে রাখার কারণে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা স্কুল, কলেজ, মাদরাসা পড়–য়া ছাত্রছাত্রী হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে পারছে না। স্থানীয়দের উৎপাদিত কৃষিপণ্য যথাসময়ে বাজারজাতকরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আর্থিক সংকটে পড়েছে। তিনি আরো জানান, বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে বার বার অবহিত করার পরও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানান।
রাজাপালং ইউপির ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য মীর সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী রোমান জানান, পশ্চিম ডিগলিয়া থেকে ডেইলপাড়া আড়াই কিলোমিটার ইট বিছানো রাস্তা খুঁড়ে ফেলে জনচলাচলের বাধা সৃষ্টি করা কোনো বিধিসম্মত কাজ হতে পারে না। সড়ক দুর্ভোগে সরেজমিন গিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উখিয়া বাজার হয়ে হাজিরপাড়া দুছড়ি সড়কের একই অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলে রাস্তা পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এ কারণে এলাকার মানুষকে গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হয়। হাজির পাড়া গ্রামের বুজুরুজ মিয়া জানান, তার জীবনে এ রকম উন্নয়ন কাজ দেখেনি। চলাচলের একটি সড়ককে খোঁড়াখুঁড়ি করে উন্নয়নের নামে জন চলাচলের বিঘœ সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দায়ভার বহন করতে হবে। সড়ক যোগাযোগের করুণ পরিণতির ঘটনায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে সরকারি দলের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবি করে স্থানীয় ওই নেতা বলেন, এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে অভিযোগ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (অব.) আশরাফ আলীর সঙ্গে সড়ক উন্নয়ন কাজের ধীরগতি ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রাস্তায় বালু ফেলা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল আলিম লিটন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তাদেরকে দ্রুত কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
"