মো. আবদুল করিম, লালপুর (নাটোর)
লালপুরে কীটনাশকমুক্ত আম উৎপাদনে ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ প্রযুক্তি
ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশকমুক্ত আম উৎপাদনে ফ্রুট ব্যাগিং (বিশেষ ধরনের কাগজের ব্যাগ) প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের আমচাষী কামরুজ্জামান লাভলু। উপজেলায় এই প্রথম চলতি মৌসুমে তিনি ৩২ হাজার আমে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। এতে আমে কোনো দাগ থাকবে না। সব ধরনের পোকামাকড়ের হাত থেকেও রক্ষা পাবে। ফলে বিদেশে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন সম্ভব হবে। এছাড়া ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ফলে আমের গুণগত মান ও ফলন দুই বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আমচাষি কামরুজ্জামান লাভলু জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বীজ প্রত্যায়ন বিভাগের উপপরিচালক আবদুল আওয়ালের উৎসাহে তিনি তার সাড়ে ৩ একর জমির দুইটি আম বাগানে খিরসাপাতী, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, আম্রপালি, গৌড়মতি, লক্ষণভোগ, ফজলি, আশ্বিনী ও কৃষাণভোগ জাতের ৩২ হাজার আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেন। এতে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে আম। পাশাপাশি আম গাছে নষ্ট হয়ে ঝরে পড়াও বন্ধ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে শুধুমাত্র আম ঝরে না পড়ার ফলে যে পরিমান ফলন বৃদ্ধি পাবে তাতেই ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারের খরচ উঠে আসবে। এরই মধ্যে তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিষমুক্ত আম ক্রয়ের আগাম ফরমায়েশ (অর্ডার) পেতে শুরু করেছেন বলে জানান।
তিনি আরো জানান, বিদেশে আম রফতানির উদ্দেশ্য ছাড়াই তিনি এই পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেন। ব্র্যাক থেকে ঋণ নিয়ে ঢাকার মল্লিকা সিড কোং থেকে চিন থেকে আমদানি করা বিশেষভাবে তৈরি কাগজের ব্যাগগুলো তিনি প্রতিটি ৩ টাকা ৯০ পয়সা দরে ক্রয় করেন। আর প্রতিটি আমে ব্যাগ পরাতে ১ টাকা করে শ্রমিককে দিতে হচ্ছে। এতে আম প্রতি ৫ টাকা করে ব্যয় হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম খান জানান, কামরুজ্জামান লাভলু লালপুর উপজেলায় প্রথম ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছেন। তাকে কৃষি বিভাগ থেকে নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার আম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে। আগামিতে লালপুরে উৎপাদিত কীটনাশকমুক্ত (রাসায়নিক) আমও বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।
"