মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পটুয়াখালী

  ২৪ জুন, ২০১৮

ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুট

নৌরুটেও চলছে ভাড়া নৈরাজ্য ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলের দিকে মানুষ

পটুয়াখালী-ঢাকা নৌরুটে অতিরিক্ত লঞ্চ দেওয়ার পরও স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তি ভাড়া ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ছুটতে হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। ঈদ উদ্যাপনের এক সপ্তাহের মাথায় গতকাল শনিবার পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে সাতটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ। ছুটি শেষ হওয়ায় যাত্রী পরিবহনের বাড়তি চাপের ফলে মিলছে না নির্ধারিত স্থান। আসন না পেয়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে লঞ্চের ছাদেও শত শত শিশু নারী-পুরুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা যাত্রী সাধারণের।

পটুয়াখালী নদীবন্দর সূত্র জানায়, ঈদে যাত্রীর চাপ থাকায় ও ঘাটে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই বেলা ১২টা থেকে পর্যায়ক্রমে পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনাল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। ঢাকার উদ্দেশে পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোর মধ্যে সুন্দরবন-৯, জামাল-৫, প্রিন্স অব আওলাদ-৭, কাজল-৭, কুয়াকাটা-১ এবং এআর খান লঞ্চটি যাত্রী বোঝাই করে পটুয়াখালী নদীবন্দর ত্যাগ করেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, অধিক লাভের আশায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে অনেকটা। তবে এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী নদী বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক মো. মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ঈদে যাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো ঠেকানো যাচ্ছে না। মাইকিং করে নিষেধ করলেও যাত্রীরা সে নিষেধ মানছে না। এই অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের আগেই লঞ্চগুলোকে ঘাট ত্যাগ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছয়টি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও দুপুর ২টা পর্যন্ত দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য নারী ও শিশুসহ পুরুষ যাত্রীদের লঞ্চের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে। যাত্রী অনুপাতে লঞ্চের ব্যবস্থা না থাকায় অসংখ্য যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পরেছে। পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে অপেক্ষারত গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া এলাকা থেকে আসা কামাল হোসেন জানান, ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে, আজ রোববার ঢাকা গিয়ে কাজে যোগ দিতে না পারলে মালিকপক্ষ ঝামেলা করবে তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে আসলেও লঞ্চে উঠতে পারিনি। কলাপাড়া উপজেলা থেকে পরিবার নিয়ে আসা রুবেল হোসেন জানান, তার কর্মস্থল সিলেট ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় ঢাকায় পৌঁছে ট্রেনযোগে সিলেট গিয়ে আজ রোববার অফিস করতে হবে কিন্তু লঞ্চ পাইনি।

এদিকে অতিরিক্ত ভাড়ায় নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। কুয়াকাটা-১ লঞ্চের যাত্রী আব্বাস কেবিন নং-৩১০ জানান, একটি সিঙ্গেল কেবিন বাবদ তার কাছ থেকে ১৪০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। একই লঞ্চের ৩০২ নং কেবিনের যাত্রী জামাল হোসেন জানান, তার কাছ থেকে ডাবল কেবিন বাবদ ২৬০০ টাকা নেয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তিনি আরো জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের তিন হাজার টাকা দাবি ছিল কোনোভাবে দরকশাকশি করে ২৬০০ টাকায় পেয়েছেন। এদিকে আর ডেকের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করেন কিন্তু প্রতিনিয়ত ডেকের ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি কোনো লঞ্চের কর্তৃপক্ষ। তবে পটুয়াখালী নদীবন্দরের উপ পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান জানান, যাত্রীদের চাপ তেমন বাড়েনি। গত বুধবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ ছিল বেশি। আমরা যাত্রীদের কথা মাথায় নিয়ে অতিরিক্ত লঞ্চের ব্যবস্থা করেছি। তিনি আরো বলেন, লঞ্চগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করতে না পারে এ লক্ষ্যে প্রয়োজনে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিয়ে লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘাট ত্যাগ করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist