বিশ্বজিৎ দাস, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার)

  ১৫ জুন, ২০১৮

না খেয়ে রোজা রেখেছেন বানভাসি অধিকাংশ মানুষ

পানির স্রোতে ভেসে চা শ্রমিক নিখোঁজ

মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙনে কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার ৫ সহ¯্রাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে। ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার কেউ কেউ খেয়ে আবার কেউ কেউ না খেয়ে রোজা রেখেছেন। প্রতিরক্ষা বাঁধে ৬টি ভাঙনের পর আরও ২টি নতুর ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন দিয়ে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। কিছু শুকনো খাবার বানভাসি মানুষের জন্য সরবরাহ করা হলেও তা মানুষের কাছে পৌঁছানো দুষ্কর বলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানগণ জানান।

এদিকে কুলাউড়া উপজেলায় টিলাগাঁও ইউনিয়নের লংলা চা বাগানের বাসিন্দা প্রদীপ মালাহা (২৮) নামক এক যুবক বুধবার সন্ধ্যায় মনু নদের পানির স্রোতে ভেসে গেছেন। প্রদীপ মালাহা নয়াবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বালিয়া এলাকায় বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যান। খবর পেয়ে কুলাউড়া ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে উদ্ধারের জন্য যান। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করেও নিখোঁজ প্রদীপ মালাহার কোন সন্ধান পাননি। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। কুলাউড়ার টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক জানান, ভাঙনের ফলে দেড় হাজারের বেশি পরিবার রয়েছে খোলা আকাশের নিচে। এর মধ্যে ৫ শতাধিক পরিবার নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ ও বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে পানির মধ্যেও বেশির ভাগ মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে যাননি। এসব মানুষ বেশির ভাগ না খেয়ে রোযা রেখেছেন। শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, মনু প্রতিরক্ষা বাঁধে সবচেয়ে বেশি (৪টি স্থানে) ভাঙন দেখা দিয়েছে শরীফপুর ইউনিয়নে। প্রায় ২ হাজার পরিবার খোলা আকাশের নিচে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তবে অনেক মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি। এরা অত্যন্ত কষ্টে রয়েছেন। ভাঙন দিয়ে প্রবল বেগে পানি বেরিয়ে যাওয়ায় আটকা পড়া মানুষকে উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা পৃথিমপাশা ও হাজিপুর ইউনিয়নে এবং রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি। গত ২দিন থেকে মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে ঈদের আগ মুহুর্তে কুলাউড়ার ৪ ইউনিয়ন এবং রাজনগরের কামারচাক ইউনিয়ন মুন নদীর ভাঙনে ৫ ইউনিয়ন ল-ভ- হয়ে গেছে। ইউনিয়ন গুলোকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানগন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় মনু নদের পানি বিপদ সীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। তবে ধলাই নদের পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতে যদি আর বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে পানি কমতে শুরু করবে।

কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌ. মো. গোলাম রাব্বি জানান, প্রথম দিন কুলাউড়ার ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নগুলোতে শুকনো খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়েছে। এসব দুর্গত মানুষের জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬০ হাজার টাকা। অনুদানগুলো পাওয়া মাত্রই দুর্গত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist