চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
‘ভন্ড কবিরাজ’র কেরামতিতে প্রাণ গেল রোগীর
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুরে সাপে কামড়ানো সকিনা খাতুন (৪৫) নামে এক রোগীকে নিয়ে রাতভর ঝাড়ফুঁক ও জলসা করেছে তুহিন নামে স্থানীয় এক কবিরাজ। কবিরাজি চিকিৎসায় তিনি হার মানলে হাসপাতলে নিতে বলেন। রোগীর স্বজনরা তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিলে শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকিনা মারা যান। পরে তার লাশ বাড়িতে আনা হলে পুনরায় কবিরাজ হাশেমকে দিয়ে লাশ ক্ষতবিক্ষত করা হয়। মৃত সকিনা আলমডাঙ্গার খাদিমপুর বিলপাড়ার মসলেম উদ্দিনের স্ত্রী। সরেজমিনে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার খাদিমপুর বিলপাড়ায় শুক্রবার মধ্যরাতে সকিনা খাতুনকে সাপে কামড়ায়। প্রথমে ইঁদুর বা ছুঁচো কামড় ধারণা করে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরে সাহ্রির সময় বুঝতে পারেন, তাকে সাপে কেটেছে। পরিবারের লোকজন তাকে পাঁচকমলাপুর মাঝের পাড়ার মৃত রেজাউল উদ্দিনের ছেলে ‘কবিরাজ’ তুহিনের কাছে নিয়ে যান। কবিরাজ তুহিন রোগীকে ঝাড়ফুঁক ও জলসা করেন। এ সময় বিষ রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে হাসপাতাল থেকে লাশ খাদিমপুর গ্রামে নিয়ে আসা হলে পুনরায় শুরু হয় কবিরাজের ভ-ামি। গৃহবধূ সকিনা এখনো বেঁচে আছেনÑ এমন আশায় একই গ্রামের মৃত ভোলা মন্ডলের ছেলে ভ- কবিরাজ হাশেমকে ডেকে আনা হয়। তার কবিরাজি কেরামতি দেখাতে গিয়ে ব্লেড দিয়ে মৃতের শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয়। পরে ‘করিবাজ’ হাশেমও তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সব নাটকের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে লাশ গতকাল শনিবার আসরের পর খাদিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
"