মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
শিশুদের দিয়ে চলছে মুন্সীগঞ্জের ইটভাটা
মুন্সীগঞ্জের ইটভাটাগুলোতে অবাধে চলছে শিশুশ্রম। পরিবেশ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে ৭৭টি ইট ভাটা রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব ইটভাটার প্রতিটিতেই রয়েছে ১৫-২০ জনের অধিক শিশুশ্রমিক। সরেজমিনে জেলার ২০টির বেশি ইটভাটায় ঘুরে দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের সঙ্গে ইটভাটার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে সাত থেকে শুরু করে ১০-১১ বছরের শিশুরা। ইট বিছানো, সাজানো, ঠেলাগাড়িতে অথবা মাথায় করে চুল্লিতে পৌঁছানো, পোড়া ইট মাথায় বহন করে এক স্থানে মজুদ করার কাজ করছে শিশুরা। অথচ, এসব কাজ শিশুদের দিয়ে করানো নিষিদ্ধ। ছেলে শিশুশ্রমিকের পাশাপাশি মেয়ে শিশুশ্রমিকও কাজ করছে।
শিশু শ্রমিক শিপন (৭) জানায়, তার বাবা শহিদুল্লাহ ভাটার চুল্লিতে কাজ করে। গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার খাগদান এলাকায়। স্কুলে ভর্তি হয়েছিল, তবে বর্তমানে সারা দিন কাজ করায় পড়ালেখার সুযোগ আর নেই। মাঝে মাঝে মাথা থেকে ইট পড়ে গিয়ে ব্যথা পেতে হয়। একই কথা জানালেন, শিশুশ্রমিক তানজিল (১১), সুমাইয়া (১০), তারেক (১০) ও শাকিল (১১)। অভিভাবকের কাছে পূর্বে দেওয়া দাদানের টাকা পরিশোধ করতেই এসব শিশুদের কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একাধিক ভাটার মালিক দাদনের বিষয়টি অস্বীকার করে জানায়, দরিদ্র শিশুদের বাবা মায়ের অনুরোধেই কাজে রাখা হচ্ছে, কাউকে জোর করা অভিযোগ পাবেন না।
অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ইটভাটার মানহীন পরিবেশে স্বাভাবিকভাবেই শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধাগস্ত করে। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক জুলিয়া জেসমিন জানান, দুজন পরিদর্শককে ইটভাটা পরিদশর্নের জন্য নিয়োজিত করা হয়েছ, কিছু দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন দিবে, প্রতিবেদন পেলেও ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও শিশুশ্রম পরীবিক্ষণ কমিটির সভাপতি সায়লা ফারজানা জানায়, কিছুদিন আগে ইটভাটাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। মালিকপক্ষদের শিশুদের কোনো ধরনের কাজে নিয়োজিত করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেউ যদি করে থাকে, তথ্য পেলে তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"