চাঁদপুর প্রতিনিধি
সরেজমিন : জলাবদ্ধতা
সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে চাঁদপুর শহর
বৈশাখ মাস থেকেই কম-বেশি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মধুমাস জ্যৈষ্ঠতেও থেমে নেই বৃষ্টি। বৃষ্টি এলেই চাঁদপুর শহর জুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। শহরের ব্যস্ততম সড়কসহ পাড়া-মহল্লায় হাঁটু পরিমাণ আবার কোথায়ও আরো বেশি পানি থাকে। অনেক এলাকার বাসিন্দা ঘর থেকে বের হতে পারেন না পানির কারণে। অপরিকল্পতিভাবে শহরে বাড়ি তৈরি, পানি নিষ্কাশনের খালগুলো ভরাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে পৌরবাসীর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে শহরের রহমপুতর আবাসিক এলাকা, পালপাড়া, নাজিরপাড়া, কুমিল্লা সড়ক, হাসান আলী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও আঞ্চলিক চাঁদপুর- রায়পুর সড়ক পানিতে টইটম্বুর। শহরের ট্রাকরোডের বাসিন্দা সুমন মোস্তান প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, রহমতপুর আবাসিক এলাকাটি ডাকাতিয়া নদীর খুবই নিকটে। কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর ওই সময় নোংরা ও ময়লা পানিগুলো বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে যায়। যার কারণে শিশুসহ সব বয়সীদের পায়ে এলার্জি জাতীয় রোগ দেখা দেয়। পৌর কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই সম্প্রতি সড়কগুলো পাকা করেছে। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে এ সড়ক একমাসও টিকবে না। শহরের পালপাড়ার বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, পালপাড়া সড়ক দিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ চলাচল করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ঘনবসতি হওয়ার কারণে বেশিরভাগ স্কুল, মাদরাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা এ পাড়া থেকে বের হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। শুক্রবার ও শনিবার দুদিনের বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে ছিল। এ কারণে যাদের বাসাবাড়ি নিচু তারা অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারেননি।
শহরের বাগাদী রোড এর বাসিন্দা ও জেলা ক্যাবের সদস্য বিপ্লব সরকার প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, শহরের এসবি খাল, রেললাইনের পাশের খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে শহরের পানিগুলো বের হওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। এ খালগুলো উদ্ধার করলে জলাবদ্ধতা অনেক কমে যাবে।
শহরের ওয়্যারলেস এলাকার কাউন্সিলর মো. আলমগীর হোসেন গাজী জানান, চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের ওয়্যারলেস এলাকায় সড়কের সংস্কার কাজ না হওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তবে খুব শিগগিরই সংস্কার কাজ শুরু হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। শহরের ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডি এম শাহজাহান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আমরা কয়েক মাস পরপরই পৌরসভার পক্ষ থেকে ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে রাখি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা নেই। তারা ড্রেনের পাশে ময়লা আবর্জনা স্তূপ করে রাখার কারণে আস্তে আস্তে সেগুলো ড্রেনের মধ্যে গিয়েই পড়ে। আর এতেই পানি নামতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
"