মো. শাকিল আহমেদ, ঠাকুরগাঁও

  ২১ মে, ২০১৮

ঠাকুরগাঁওয়ে টাকার বিনিময়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ

ঠাকুরগাঁওয়ে স্মার্টকার্ড বিতরণে আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশ না নেওয়া ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে প্রতিবাদ করছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার সকাল থেকে স্থানীরা গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ও পৌরসভায় স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয় চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ও শেষ হবে আসছে ২১ জুলাই। জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে ৩৪৫ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে। এরপর ব্যাংক ড্রাফটের রশিদ এবং এনআইডি নম্বর সংশ্লিষ্ট কার্ড বিতরণ কেন্দ্রে জমা দিয়ে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১২ মে থেকে গড়েয়া ইউনিয়নে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৯ মে শেষ হয়। গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. জুয়েল ও তার সহযোগী কুমোত চন্দ্র বর্মণ স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা বলে এলাকার ১১০০ জনের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। আরো অভিযোগÑ ব্যাংক ড্রাফট, হাতের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ না নিয়েই ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কক্ষ থেকেই গোপনে স্মার্টকার্ড বিতরণ করেছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সামশুল আজম, গড়েয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল ইসলাম রেদো শাহ কয়েক দফায় মিটিং করে স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও গোপনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সরেজমিন জানা যায়, গত শনিবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সামশুল আজম, গড়েয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল ইসলাম রেদো শাহকে ইউনিয়ন পরিষদে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

গড়েয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, উদ্যোক্তা জুয়েলকে ৪০০ টাকা দেওয়ার পর সে তথ্যসেবা কেন্দ্র করে আমাকের স্মার্টকার্ড দিয়েছে। গড়েয়ার ঢাঙ্গীপুকুর গ্রামের নজর আলী বলেন, স্মার্টকার্ড নেওয়ার জন্য জুয়েলকে ৪০০ টাকা দিয়েছি। শুধু আমি না, গড়েয়া ইউনিয়নের প্রায় ১১০০ মানুষ ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে কার্ড নেওয়ার জন্য চার-পাঁচশ করে টাকা দিয়েছে।

গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. জুয়েল বলেন, আমাদের সঙ্গে চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কয়েক দফায় মিটিং করেছে। এরপর চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের টাকা নিতে বলেছে; কিন্তু এখন উল্টো আমরাই বিপদে পড়ে গেছি। গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল ইসলাম রেদো শাহ বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সামশুল আজম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের স্মার্টকার্ড বিতরণ এটি আসলে দুঃখজনক ঘটনা। আমি বিষয়টি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি; আর বিষয়টি আমরা দেখছি। ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিলহাজ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কেউ বলেনি; আপনার কাছ থেকে শুনলাম। স্মার্টকার্ড বিতরণ কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোথাও থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ অবৈধ। স্মার্টকার্ড নিয়ে অর্থ লেনদেন প্রশ্নই আসে না। কারণ, সরকার বিনামূল্যে জনগণকে স্মার্টকার্ড দিচ্ছে। তারপরও কেউ যদি জনগণকে ঠকিয়ে এ ধরনের কাজ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist