মাইনুদ্দিন রুবেল, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
টানা বৃষ্টিতে লিচুতে ফাটল লোকসানের আশঙ্কা মালিকদের
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাগানের লিচুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে লিচুতে বিনিয়োগ করা অর্ধেক টাকাও তুলতে পারবেন না বলে শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর ও হরষপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বোম্বাই, পাটনাই ও চায়নাÑএই ত্রি-জাতের লিচু চাষ হয়। এ পাঁচ ইউনিয়নে ৩০০ হেক্টর জমিতে সাধারণ লিচু চাষ করা হয়।
উপজেলার সেজামোড়া গ্রামের লিচুবাগানের ক্রেতা মোর্শেদ মিয়া বলেন, ‘পাঁচ লাখ টাকায় ৪২০ শতাংশ জমির একটি লিচুবাগান কিনেছি। ওই বাগানে ১৮০টি লিচু গাছ রয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে গাছের লিচু ফেটে যাচ্ছে।’ তিনি জানান, পাঁচ লাখ টাকায় বাগান কিনলেও পুঁজি তুলতে পারবেন না। দুই লাখ টাকায়ও বিক্রি হবে কি না, এই সংশয়ে রয়েছেন তিনি।
উপজেলার পাহাড়পুরের কাউসার ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার চারটি বাগানে ১৬০টি লিচু গাছ রয়েছে। প্রতি বছর লিচু বিক্রি করে ১০-১২ লাখ টাকা পেতাম। এই বছর সর্বোচ্চ চার-পাঁচ লাখ টাকার বেশি লিচু বিক্রি করতে পারব না। কারণ বৃষ্টিতে বাগানের অধিকাংশ লিচুই ফেটে গেছে।’ কামলমোড়া গ্রামের লিচু বাগানের মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার দুটি বাগানে ৮০টি লিচুগাছ রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও শিল পড়ায় প্রায় ৪০টি গাছের সব লিচু ফেটে গেছে।’ উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে ওষুধ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি জানান, গত বছর লিচু বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা আয় করলেও এবার দুই লাখ টাকা আয় করতে পারবেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশকর আলী বলেন, উপজেলায় এবার লিচুর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। গত বছর উপজেলায় প্রায় ছয় কোটি টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে। এর আগের বছর প্রায় ১৩ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হয়েছিল। এ বছর ন্যূনতম ১০-১২ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে জানান। লিচুর ফাটল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে লিচুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল রোধে বাগানে প্রয়োজনীয় সার, স্প্রে ও কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
"