ইমরান হোসাইন, পাথরঘাটা (বরগুনা)
উপকূলে চলছে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি
আসছে বর্ষা, ইলিশের ভরা মৌসুম। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা কেটে যাওয়ায় ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন উপকূলের কয়েক হাজার জেলে। নদী-সাগরে যাওয়ার জন্য বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার প্রায় ২২ হাজার জেলে জাল বুনন, ট্রলার মেরামত ও পুরাতন জাল রিপু করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিন জানা গেছে, গত বছর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে জেলেপল্লীগুলোতে। বিভিন্নজনের কাছে ধারদেনা করে পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে ইলিশ ধরার। বসে নেই মহাজনসহ ট্রলার মালিকরা। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সবকটি জেলেপল্লীতে এমন প্রস্তুতি দেখা গেছে। এদিকে ছিটেফোঁটা ইলিশ এখনই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। তবে আর কিছুদিন গেলে শুরু হবে ইলিশ শিকারের ভরা মৌসুম। আবারও সাগরের বুকজুড়ে শুধু জেলে আর নৌকার দেখা মিলবে।
আরো জানা গেছে, পাথরঘাটা মৎস্য বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় জেলেরা ৩ শতাধিক নতুন ট্রলার তৈরি করছেন। এরা সবাই গভীর সাগরে এ বছর ইলিশ শিকারের প্রস্তুতি নিয়েছেন। জেলে জাফর আলী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, গত বছর সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় এবার এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। এই টাকায় নতুন জাল ও ট্রলার মেরামত করছেন। আশা করছেন, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। এ দিয়ে ঋণও পরিশোধ হবে, লাভের মুখও দেখা যাবে। পাথরঘাটা বিষখালী নদী পাড়ের জেলেরা জানান, এ বছরও সাগরে বোট নামানোর প্রস্তুতি তাদের শেষের দিকে। জালসহ বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করেছেন। বাপ-দাদার মাছের পেশা এখনো ধরে রেখেছেন। পেটের তাগিদে সাগরে নামতেই হবে বলেও জানান তারা। স্থানীয় বরফকলের ম্যানেজার মিহির কুমাড় আঁশ প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, গত বছর পাথরঘাটায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছিল। বরফ তৈরিতে তাদের মহাব্যস্ত থাকতে হয়েছিল তখন। লাভও হয়েছে ভালো। মূলত ইলিশের সময়ই চলে বরফের ব্যবসা। তাই সামনের ইলিশের মৌসুম ঘিরে বরফ তৈরিরও প্রস্তুতিও চলছে তাদের।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, এ বছর কঠোরভাবে পালিত হয়েছে ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্যরক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়া জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে এ বছর ২৫-৩০ ভাগ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর জাটকা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৩ হাজার ৯৮২টি জেলে পরিবারের জন্য নভেম্বর-মার্চ এই চার মাস মোট ৬৩৭ দশমিক ১২ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
"