উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
নানা সংকটে উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ
উলিপুর ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণের ৩১ বছর পর আইটি শিক্ষকের পদ সংযোজন ছাড়া আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। উপেক্ষিত হয়েছে অনার্স কোর্স চালুর দাবি। দেওয়া হয়নি নতুন শিক্ষক।
জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে উলিপুর বিডি কলেজ নামে স্থাপিত হয় উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুলে। দেশ স্বাধীনের পর প্রায় সাত একর জমির মধ্যে স্থাপিত কলেজটি বৃক্ষরাজীর ছায়া ঘেড়া সুবিশাল ক্যাম্পাস একসময় শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল। জেলার দক্ষিণের উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের একমাত্র বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত এ কলেজটি। ১৩টি বিষয়ের জন্য ২৬ জন শিক্ষক ও ১৯ কর্মচারীর পদ থাকা অবস্থায় বিগত ১৯৮৭ সালে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। কিন্ত জাতীয়করণের পর শিক্ষকরা পদোন্নতি নিয়ে অন্যত্র, কেই আবার অবসরে চলে যায়। কিন্ত শূন্যস্থান পূরণ হয় না ফলে একপর্যায় অধ্যক্ষসহ প্রায় শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়ে কলেজটি। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমতে থাকে। বর্তমানে এইচএসসিতে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৫২৮জন ও ডিগ্রিতে শুধু বিএসএস এ ১৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জাতীয়করণের পর ২০ বছর অধ্যক্ষ ও ১২ শিক্ষকের পদশূন্য। এদিকে সব যোগ্যতা থাকার পর ও কলেজটিতে অনার্স কোর্স না খোলার ও ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্র প্রত্যাহার করার কারণে এক সময়ের শিক্ষার্থী মুখোরিত কলেজটি এখন শিক্ষার্থীর অভাবে দেখা দিয়েছে অচল অবস্থা।
ডিগ্রি চতুর্থবর্ষের শিক্ষাথী রফিকুল ইসলাম জানান, অনার্স কোর্স খোলা হবে এ আশায় কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম কিন্তু এখন সে আশায় গুড়েবালি। অনার্স খোলার জন্য আন্দোলন করলাম তবু ও হলো না। এখন জীবনটাই বরবাদ হওয়ার পথে। এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী সুষ্মিতা আক্তার জানান, অধিকাংশ বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় বাইরে প্রাইভেট পড়তে হয়েছে দ্বিতীয়বর্ষে ইংরজিসহ কয়েকটি বিষয়ের ক্লাস তেমন একটা হয়নি। কিন্ত আমার দরিদ্রতার কারণে বাইরে প্রাইভেট পড়া সম্ভব হয়নি।
ইংরেজি বিভাগের একমাত্র শিক্ষক নাজমা আখতার জানান, তার একার পক্ষে এত শিক্ষার্থীর ক্লাস নিতে হিমশিম খেতে হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহের জানান, শিক্ষক-কর্মচারী সংকট ও অনার্স কোর্স না খোলার কারণে কলেজটি অতীত ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। কলেজটিতে অনার্স খোলার সব যোগ্যতা থাকার পরও তা হচ্ছে না। কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু হলে দরিদ্র এলাকার প্রচুর শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারবে।
"