আমিনুল ইসলাম, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ)

  ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

স্থানীয়দের বাধা উপেক্ষা

শ্রীনগরে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঢালাই কারখানা

স্থানীয়দের বাধা উপেক্ষা করে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের জনবসতিপূর্ণ গ্রামে গড়ে উঠেছে ঢালাই কারখানা। এর নেই কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র, নেই জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন। অথচ প্রতিষ্ঠানটিতে দিন-রাত পুরোদমে রাসায়নিক চুল্লী জ¦ালিয়ে সিসা, দস্তা, অ্যালুমিনিয়ামের বিদ্যুতের তার গলিয়ে যাচ্ছে। এতে গুরুতর পরিবেশ বিপর্যয় হলেও কারখানা বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলছেন, এ বিষয়ে তিনি অবগতই নন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারখানাটি উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের ফৈনপুর গ্রামের নির্জন একটি এলাকায় অবস্থিত। বাইরে সাইনবোর্ড না থাকলেও সুমাইয়া সাকিয়া এন্টারপ্রাইজ নামক এ কারখানাটির প্রকৃত মালিক সোহরাব আলী সরদার (৪৫)। তিনি কোলাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

সরেজমিনে গিয়ে সাইনবোর্ড বিহীন ঢালাই কারখানায় দেখা যায়, রাসায়নিক চুল্লী পুরোদমে জ্বলছে, গলানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার ধাতব পদার্থ। কাজে ব্যস্ত ১০ জনের অধিক শ্রমিক। এর মধ্যে দেখা মিলল দুইজন শিশু শ্রমিকের সঙ্গেও। ঢালাই কারখানাটির বিষাক্ত ধোঁয়ার উৎকট গন্ধে এর আশপাশে অল্প কিছুক্ষণ দাঁড়ানোই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আশাপাশে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির রাসায়নিক চুল্লীর ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ করছে। এখানে গলানো অনেক কাঁচামালই চোরাই মাল। এগুলো গলিয়ে তৈরি প্লেট ট্রাকে করে ঢাকার মিডফোর্টসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। এছাড়াও পুরনো যানবাহনের ধাতব যন্ত্রাংশ পোড়ানোর রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যার প্রধান ভুক্তভোগী এলাকার শিশুসহ গর্ভবতী নারী।

কারখানা স্থাপনে সরকারের নিয়মানুযায়ী পরিবেশের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের সনদপত্র, রাজস্ব আয়, টিন সার্টিফিকেট, বিএসটিআই, ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ও সিটি-করপোরেশন এলাকায় হলে তার ট্রেড-লাইসেন্স দরকার হয়।

জানতে চাইলে ম্যানেজার আ. আলিম (৬০) কারখানার বৈধতার বিষয়ে বলেন, আমাদের এ কারখানার অনুমোদনের কোনো ধরনের কাগজপত্রই নাই এটা সত্যি। তবে এতে কোনো ধরনের চোরাই ধাতব গলিয়ে প্লেট তৈরি করি না। বায়ুদূষণসহ পরিবেশ বিনষ্ট করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি জবাবে বলেন, এ কারখানার কারণে এলাকার বায়ুদূষণ হচ্ছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারখানাটি আমাদের গ্রামে স্থাপনের আগে এলাকাবাসী সবাই মিলে বাধা দিয়েছিলাম। আমাদের বাধায় কোনো কাজ হয়নি। কারণ এ ধরনের ঢালাই কারখানার ক্ষতিকর প্রভাব আমরা আগেই জানতাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কারখানাটি বহাল তবিয়তে রয়েছে। তবে বিষয়টি আমাদের কাছে অতি রহস্যজনক বলে মনে হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist