লালমনিরহাট প্রতিনিধি
পাটগ্রামে নারীকে মারধর করে ঘর ভেঙে দিল চৌকিদার
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় জমি সংক্রান্ত জেরে আবিরন বেওয়া (৫৬) নামে এক নারীকে বাঁশের সাথে বেঁেধ রেখে তার ঘর ভেঙে নিয়ে গেল চৌকিদাররা। এ সময় ওই নারীকে পিটিয়ে জখম করা হয়। আবিরন বিলুপ্ত ছিটমহল জমগ্রাম এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের স্ত্রী।
গত রোববার আবিরন বেওয়াকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পাটগ্রাম থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে আরিরনের পরিবারের সদস্যরা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
স্থানীয়রা জানান, পাটগ্রাম উপজেলার সামাদের ছেলে আবু সাঈদ একই গ্রামের মতিয়র রহমানে ছেলে শাহিন মিয়ার কাছ থেকে তিন বছর আগে ৭ শতক জমি ক্রয় করেন। ক্রয় সূত্রে বসতঘর নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন তারা। কিছু দিন যাওয়ার পর শাহিন মিয়ার অন্য দাগের ৭ শতক জমি বিক্রয় করছেন বলে ক্রেতা আবু সাঈদের নিকট দাবি করেন এবং জমিতে বসতঘর উচ্ছেদ করার হুমকি দেন। এ ঘটনায় আবু সাঈদ বসতবাড়ি রক্ষায় আদালতে একটি মামলা দায়েরও করেন। গত শনিবার সকালে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার দলবল নিয়ে আবিরন বেওয়াকে বাঁশের সাথে বেঁধে রেখে ঘর ভেঙে নিয়ে যায়।
নারগিস আক্তার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শনিবার সকালে হঠাৎ ইউনিয়ন পরিষদের চারজন চৌকিদারসহ ও কয়েকজন লোক বাড়িতে গিয়ে কোন কথা না বলিয়ে ঘর ভাঙা শুরু করেন। এ সময় আবু সাঈদের মা আবিরন বেওয়া তাদের বাঁধা দিলে তাকে বাঁশের সাথে বেঁধে মারধর করেন। পরে ঘর ভেঙে ট্রাক্টরে করে মালামাল নিয়ে যায়।আবু সাঈদের স্ত্রী আয়শা বেগম (২০) বলেন, শাশুড়িকে রেখে বাহিরে গেলে শাহিন ও চার চৌকিদার পরিকল্পিতভাবে ঘরের জিনিসপত্র, টাকা পয়সা এবং ঘর ভেঙে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত শাহিন মিয়া বলেন, আমি ঘর ভাঙিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদাররা ঘর ভেঙে নিয়ে গেছে। এ বিষয় আমি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছি। বাউরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসুনিয়া দুলাল জানান, এর আগে ওই পরিবারকে বাড়ি না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরিষদের চৌকিদাররা তাদের ঘরের মালামাল এনে ইউনিয়ন পরিষদের জমা দিয়েছে। তবে বৃদ্ধাকে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
আবু সাঈদ বলেন, আমার আহত মাকে নিয়ে আমি রংপুর হাসপাতালে আছি। মা আমার একটু সুস্থ্য হলেই আমি আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করব। পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক ফিরোজ কবির জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি এক দিনের জন্য দায়িত্বে আছি মাত্র। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"