দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ
মুকসুদপুরে পাটের তৈরি হস্তশিল্পের পণ্য বিশ্ববাজারে
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামে পাটের তৈরি পণ্য বিদেশে রফতানি করে লাভবান হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো। ‘বেজ বাংলাদেশ’ নামে একটি বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে ওই পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানিও হচ্ছে।
সরেজমিন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের পূর্ববতী সময়ে বাংলাদেশে ফাদার জনা আবৃত্তি নামে একজন আমেরিকান প্রবাসী এ দেশে আসেন। তখন থেকে এ দেশের হতদরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে ১৯৭৮ সালে পাট হস্তশিল্পের ওপর অসহায় ও দরিদ্র মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেন। তখন থেকে গুটি গুটি পায়ে মহিলাদের পাটের তৈরি হস্তশিল্পের পথচলা শুরু হয়। জনা আবৃত্তি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, মোংলা, মুজিবনগর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরাসহ আরো অনেক জেলায় এ হস্তশিল্পের কাজের প্রতিষ্ঠা করে যান। এ ছাড়াও তিনি এনজিওভিত্তিক স্কুল, হোস্টেল এবং দরিদ্র ভূমিহীন পরিবারের খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেন ।
কলিগ্রামের পাট হস্তশিল্প সভানেত্রী মেরী বাড়ৈ বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা এই পাট হস্তশিল্পের কাজ করি। আমাদের এখানে প্রায় ৩০ জন মহিলা এই কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। কাঁচা পাট দিয়ে বেণি করে পাটের বিভিন্ন জিনিস তৈরি করি। এর মধ্যে ডিনার সেট, বাস্কেট বক্স, ভেনিটি ব্যাগ, ফিকা, পুতুল, জেব্রা, ভেড়া, দোলনাসহ আরো অনেক কিছু তৈরি করে। বেজ বাংলাদেশ (ইধংব ইধহমষধফবংয) নামে একটি বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে আমাদের তৈরি এই পণ্য ক্রয় করে বিদেশে পাঠানো হয়। ওই সংস্থা আমাদের পণ্যের অর্ডার দেয় এবং সেই পণ্য আমরা তৈরি করে যথাসময়ে সরবরাহ করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার আমাদের একটু সাহায্য করলে আরো অনেক দরিদ্র পরিবার এ প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠত বলে আমার বিশ্বাস।’
এ ব্যাপারে সাতপাড় সরকারি নজরুল ইসলাম কলেজের প্রভাষক আশীষ কুমার বাকচী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে অবশ্যই পাটশিল্পের দিকে সরকারের নজর দিতে হবে। পলিথিন বন্ধের একমাত্র উপায় পাটের ওপর ঝুঁকে পড়া।
"