পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি
যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা
যৌতুকের টাকা না পেয়ে তানজিনা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগুনে তানজিনার শরীরের ৪৫ ভাগ পুড়ে গেছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে নরসিংদীর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের সান্তানপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় তানজিনা আক্তারের স্বামী ওমর সানি (২৫) ও শ^শুর শিপন মিয়াকে (৪৫) আটক করেছে পলাশ পুলিশ।
ওমর সানি সান্তানপাড়া গ্রামে অবস্থিত ক্যাপিটাল পেপার মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন। তানজিনা আক্তারের মা রাবেয়া বেগম জানান, যৌতুকের টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই তানজিনার ওপর নির্যাতন করত। নির্যাতনের হাত থেকে মেয়েকে রক্ষায় তারা ৫০ হাজার টাকাও দিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি আবারও দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। এবার তাদের দাবিকৃত টাকা না দিতে পারায় বৃহস্পতিবার রাতে তানজিনার স্বামী ওমর সানি, শ^শুর শিপন মিয়া, শাশুড়ি শাহানাজ বেগম ও ফুফু শাশুড়ি রুজিনা আক্তার তাকে বেদম মারধর করে। এক পর্যায়ে তানজিনা অজ্ঞান হয়ে গেলে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তানজিনার শরীরের আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তানজিনাকে উদ্ধার করে নরসিংদীর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আরো জানা যায়, দুই বছর আগে ঘোড়াশাল পৌরসভার ঘাগড়া গ্রামের মৃত সবুজ মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তারের সঙ্গে ডাঙ্গা ইউনিয়নের সান্তানপাড়া গ্রামের শিপন মিয়ার ছেলে ওমর সানির সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই বাবার বাড়ি থেকে ব্যবসা করার জন্য টাকা দাবি করে তানজিনার শ^শুরবাড়ির লোকজন। মেয়ের সুখের জন্য ঋণ করে ৫০ হাজার টাকাও দেয় তানজিনার মা। সংসার জীবনে নয় মাসের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে তাদের। সম্প্রতি দুই লাখ টাকা যৌতুক চাইলে তানজিনার পরিবার টাকা দিতে না পারায় মেয়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করে তারা। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, অভিযুক্ত ওমর সানি ও শিপন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে তানজিনা আক্তারের স্বামী ও শ^শুরসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত অন্য আসামিদের আটকে অভিযান চলছে।
"