শিশির মাহমুদ, রাবি
থমকে আছে রাবির মতিহার হলের নির্মাণকাজ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলের বর্ধিতাংশের নির্মাণকাজ টাকার অভাবে থমকে আছে। গত বছরের জুন মাসে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার চুক্তি থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ হল কর্তৃপক্ষ ৪ এপ্রিল কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রকৌশল দফতরকে লিখিত আবেদন করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে হলে অধিকতর আবাসন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে মধ্য, উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব ব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ৯ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দে টেন্ডারের মাধ্যমে চার তলা বিশিষ্ট ব্লকগুলোর নির্মাণকাজ পায় জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসেন এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটিকে ২০১৭ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ভবনের কাজ সম্পূর্ণ করে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। তবে, উল্লেখিত কার্যাদেশে ওই টাকার মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু হলের কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বিজ্ঞান ভবনের বর্ধিতাংশের নির্মাণকাজ হাতে নিয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, চার তলা বিশিষ্ট নতুন এই চারটি ব্লকের মধ্যে শুধু মধ্য ব্লকের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে ঠিকাদার। বাকি তিনটি ব্লকের শুধুমাত্র প্রথম তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে টাকা শেষ হওয়া দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি। আর অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে আরো ১ কোটি টাকা চেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় হল কর্তৃপক্ষ আবাসিক সুবিধা প্রদান করতে পারছে না। এ অবস্থায় নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক কর্মচারী বলেন, ‘গত বছর থেকে শুধু শুনেই আসছি যে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া ব্লকগুলো বুঝে দেওয়া হবে। আমরা সে লক্ষ্যে কয়েকবার অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবাসনের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছি। কিন্তু, ভবনগুলো আমাদের বুঝিয়ে না দেওয়ায় আমরা কাউকে নতুন করে আবাসিক সুবিধা প্রদান করতে পারছি না।’
জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলী আসগর বলেন, ‘জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মূল কাজের অধিকাংশ বাকি থেকে গেছে। এ ছাড়া সম্পন্ন হওয়া ব্লকগুলোকে হল কর্তৃপক্ষকে বুঝে দেওয়ার কথা ছিল গত বছরের শেষের দিকে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের চার মাস অতিক্রান্ত হলেও ভবনটি বুঝিয়ে দিতে পারেনি।’ ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘কাজ শেষ করতে আমরা অর্থ চেয়ে প্রকৌশল দফতরকে জানিয়েছি। প্রকৌশল দফতর থেকে অনুমতি মিললেই ভবনের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো সিরাজুম মুনীর বলেন, বিভিন্ন জটিলতায় কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় শেষ হতেও সময় লাগছে। কাজ সম্পন্ন করতে আরো এক কোটি টাকা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।
"