ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাগেরহাটে প্রতি পিস পানের মূল্য পাঁচ টাকা!
ঝাল আর মিষ্টির মিশ্রণের কারণে দেশজুড়ে পরিচিত রয়েছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পানের। তবে গত দুই মাস ধরে পানের মোকামগুলোতে পাইকারি দামে সর্বকালের সেরা রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে একটি পানই কিনতে হচ্ছে পাঁচ টাকায়। যা খিলি পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২টাকায়। পাইকারি পান বিক্রেতারা বলছেন, শৈত্য প্রবাহ ও বৃষ্টির পানি না সরতে পারায় এ বছর পানের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পানের যোগান না থাকায় পানের বাজারের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এ বছর পানের দাম নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার নওয়াপাড়া মোকামের পাইকারী পান ব্যবসায়ীরা এ প্রতিবেদককে জানান, ভালোমানের পানের প্রতি গাদি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৮ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ২২ হাজার টাকা। মাঝারি মানের প্রতি গাদি পান বিক্রি হচ্ছে ২৪ হাজার টাকায়, যা আগে ছিল ১৩ হাজার টাকা ও ছোট পানের প্রতি গাদি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকা, যা আগে ছিল মাত্র ১৬শ’ টাকা। হিসাব অনুযায়ী প্রতি ৮০ পিস পানে এক বিড়া আর প্রতি ৮০ বিড়ায় এক গাদি পান হয়।
উপজেলার উল্লেখযোগ্য পানের মোকামের সর্বশেষ খুচরা বিক্রির তথ্য অনুযায়ী, ভালোমানের পানের প্রতি বিড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১২৫ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি মানের প্রতি বিড়া পান বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা আগে ছিল ১৪০ টাকা ও ছোট আকারের পানের প্রতিবিড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা আগে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা করে।
উপজেলার স্থানীয় পান চাষি সাধন সরকার, মিরাজুল ইসলাম, জানান, গত বছর বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় এ অঞ্চলের পানের বরজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহ ও প্রচ- কুয়াশায় কারণে উপজেলায় পান বরজের অর্ধেক নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে যেসব চাষি বিভিন্নভাবে কিছু পান বাঁচাতে পেরেছেন তারাই এখন পান বাজারে আনছেন। এই পান চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে বাজারে পানের দাম আকাশ ছোঁয়া। তারা আরও জানায়, এত দামে পান আগে কখনও বিক্রি হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন জানান, এ উপজেলায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে নদী-নালাতে পলি জমে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় প্রায় ২৫০ হেক্টর জমির পান নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া শৈত্যপ্রবাহে কিছু পান ঝরে গেছে। তারপরও ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
"