গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
শিক্ষকরা গেলেন মেলায় শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত খেলায়
কোনো কক্ষ একদম ফাঁকা, কোনো কক্ষে শিক্ষার্থীরা বেঞ্চের ওপর বসে হইচই করছে, কোনো কক্ষে আবার পাঠদানও চলছে। এর মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলার আসড় জমিয়েছে। তাঁদের ঘিরে রেখেছে দর্শক সারিতে বসা সহপাঠীরা। স্কুলের ভেতর গিয়ে ১০ জন শিক্ষকের মধ্যে পাওয়া গেলো মাত্র ৩জনকে। সোমবার দপুরে গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র ছিলো এটা। স্কুলের সামনে অপেক্ষমান কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, মডেল স্কুল আর মডেল থাকলো না। নানা অনিয়মে স্কুলটি প্রায়ই সংবাদের শিরোণাম হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অচিরেই এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে জানা গেছে, পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর বিপরীতে শিক্ষক আছে ১০ জন। বাকি ৭ জনের মধ্যে সোমবার স্কুলে সহকারি শিক্ষক রোজি সুলতানা, নাজমা বেগম ও মতিউর রহমানকে স্কুলে পাওয়া যায়। তবে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীম আরা, সহকারি শিক্ষক, রফিকুল ইসলাম, বিলকিস বেগম ও সুলতানা রাজিয়া। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজি সুলতানা বলেন, সোমবার ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে জানায় তিনি সহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপকরণ মেলায় আছেন। আমরা তিন শিক্ষক স্কুলের ক্লাসগুলো যেনো চালিয়ে নেই। পরে বিকাল ৩টার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীম আরা ও সহকারী শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া স্কুলে এসে হাজিরা খাতায় ‘সকাল ৯টা’ সময় উল্লেখ করে সাক্ষর করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীম আরার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে সোমবার সকালে গৌরীপুর সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিস্কুট বিতরণ করে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারপাড়া স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আম্বিয়া আক্তার শাহীন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বেলা ১২টার পর স্কুল বন্ধ করে শিক্ষকরা উপকরণ মেলায় এসেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুয়েল আশরাফ বলেন, স্কুলগুলো থেকে এক/দুজন করে শিক্ষক মেলায় অংশগ্রহণ করতে এসেছে। তবে সরকারপাড়া স্কুল বন্ধ করে শিক্ষকরা মেলায় অংশ গ্রহণ করেছে এই বিষয়টি আমাকে স্কুলের কেউ জানায়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"