মেহেদী জামান লিজন, কনবি

  ১০ মার্চ, ২০১৮

খুঁড়িয়ে চলে ‘ব্যাথার দান’!

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ বিভাগের ছয় হাজারের অধিক শিক্ষার্থী, দেড়শ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর চিকিৎসা দেওয়ার একমাত্র মেডিকেল সেন্টার ‘ব্যাথার দান’। অথচ সেই ‘ব্যাথার দান’ই ডাক্তার স্বল্পতা, ঔষধ সংকট, ২৪ ঘন্টা খোলা না থাকা, সপ্তাহে দুইদিন বন্ধ থাকাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এসব বিষয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই কর্তৃপক্ষের। এক প্রকার উদাসীনতা আর খামখেয়ালিপনায় চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টারটি।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, রাত্র আটটার পর থাকেন না কোনো চিকিৎসক। শুক্রবার ও শনিবার সর্বক্ষণ বন্ধ থাকে ব্যাথার দান। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী কর্তব্যরত ডাক্তার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর রোগীদের কাছ থেকে পাওয়া গেল প্রয়োজনীয় ঔষধ না থাকার আক্ষেপ।

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাথার দান মেডিকেল সেন্টার ঘুরে দেখা গেছে, নানা অবহেলার চিত্র। মেডিকেলে প্রবেশ গেইটের সাথেই থাকে ওজন মাপার মেশিন, কিন্তু সেটা দিয়ে ওজন মাপা যায় না। মেডিকেল সেন্টারে জরুরি রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য নেই জরুরি ওয়ার্র্ড। সেন্টারে সর্বক্ষণিক পরিবহন সেবার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে বটে, তবে সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। প্রাথমিক চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে গুরুতর রোগে আক্রান্ত রোগীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে বেগ পেতে হচ্ছে রোগীদের। এছাড়া প্যাথলজি ইউনিট, ফার্মাসিটিক্যাল ইউনিট, মেশিন, ল্যাব, এক্স-রে মেশিন, চোখের সমস্যা, ব্লাডের সমস্যা, পেটের গুরুতর পিড়া, জন্ডিস, ডেঙ্গুজ্বরের মতো রোগের চিকিৎসার জন্য নেই যন্ত্রপাতি। অপরদিকে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে সেগুলোর দশাও বেহাল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান জীবন জানান, সব রোগের একি ঔষধ, আর তা হল নাপা, এলাট্রল। লোকপ্রশাসন বিভাগের নিলয়, বাংলা বিভাগের রায়হান ক্ষোভের সঙ্গে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে দেখে আসছি ডাক্তার মোটামুটিভাবে দেখে ওষুধের স্লিপ হাতে ধরিয়ে দেন, ঔষধ চাইলে বলে ঔষধ নেই। বাইরে থেকে কিনে নিবেন। এছাড়া একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডাক্তার দশ দিনের ঔষধ লিখে দিলে, মেডিকেল থেকে দেওয়া হয় দুই-তিনের দিনের ট্যাবলেট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মেডিক্যাল কর্মকর্তা জানান, মেডিকেলের জন্য বাজেট খুবই সীমিত। যা বাজেট হয় তা দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমানের ঔষধ এবং উন্নত যন্ত্রপাতি ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, ঔষধ দিতে কোনো ধরনের অবহেলা করা হয় না। কিছু কিছু ঔষধ এখানে থাকে না, যার জন্য বাহির থেকে ক্রয় করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, আমরা চিকিৎসাসেবা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist