স্বকৃত গালিব, কুবি প্রতিনিধি

  ০৭ মার্চ, ২০১৮

৭ ব্যাচের বিপরীতে শিক্ষক মাত্র ৭ জন!

সেশনজটে জর্জরিত কুবির রসায়ন বিভাগ

শিক্ষক স্বল্পতা আর সেশনজটের কবলে ঘোরপাক খাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)র রসায়ন বিভাগ। একযুগ আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালে ২০১০-২০১১ সেশনের মাত্র ২২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে রসায়ন বিভাগ। স্বাভাবিক নিয়মে স্নাতকোত্তরসহ ৫টি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও বর্তমানে এ বিভাগে ৭টি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। সেই সঙ্গে চলছে আরও একটি ব্যাচের ভর্তি কার্যক্রম। সেশনজটের অভিশাপে অনিশ্চয়তা, হতাশা আর নানা উৎকন্ঠায় দিন পার করছেন এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে এ বিভাগে মোট ১১ জন শিক্ষকে থাকলেও তাদের মধ্যে ৪ জনই রয়েছেন শিক্ষাছুটিতে। প্রতি সেমিস্টারে বিভিন্ন ব্যাচে গড়ে ৮টি করে কোর্স থাকে। কিন্তু শিক্ষক স্বল্পতায় কোর্সগুলো চালিয়ে যাওয়া বিভাগের জন্য দুষ্কর হয়ে উঠেছে। বিভাগের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, এমন হলে আমরা কি শিখবো? আবার শিক্ষকরা প্রায়ই অনিয়মিতভাবে ক্লাসে আসেন, অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না ক্লাসের সময়সূচি। ফলে পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিভাগে উপস্থিত থাকতে হয়। ব্যবহারিক নির্ভর বিভাগ হওয়ার পরও ল্যাবে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় ব্যবহারিক শিক্ষাও ব্যাহত হচ্ছে।

এ দিকে প্রায় এক বছর আট মাসের সেশনজটে জর্জরিত এ বিভাগের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এক বছরের বেশি সময় ধরে সেশনজটে জর্জরিত বিভাগের ৭ম, ৮ম ও ৯ম ব্যাচ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবনের সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার রেজাল্ট পায়নি অধ্যয়নরত ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী নুসরাত জেরিন বলেন, ‘২০১১ সালে ভর্তি হয়ে ২০১৮ সালেও রেজাল্ট না পাওয়ায় তীব্র হতাশায় রয়েছি।’ অপর এক শিক্ষার্থী তাহরিনা জিন্নাত বলেন, ‘আমরা বর্তমানে প্রায় ২০ মাসের জটে আছি। আমাদের স্নাতক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রায় ১০ মাস পর প্রকাশিত হওয়ায় আমরা চাকুরী জীবন থেকেও অনেক পিছিয়ে আছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী জানান, পরীক্ষা বিধি অনুযায়ী এক সেমিস্টারে ক্লাস হতে ১৩ সপ্তাহ, পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শিক্ষার্থীরা পাবেন ২ সপ্তাহ, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২ সপ্তাহ ধরে এবং পরীক্ষার পরে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের কথা বলা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার অভাবে পরবর্তী সেমিস্টারের কোর্স শেষ হওয়ার পরেও ফলাফল পান না তারা। অনেক সময় ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় পরবর্তী সেমিস্টারের কোর্স শেষ হওয়ার পরেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। ফলে এক সেমিস্টার শেষ করতে প্রায় আট মাসের অধিক সময় লেগে যায়।

শিক্ষক সংকট ছাড়াও এ বিভাগে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি ও ল্যাবের যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। আনুষঙ্গিক কাজকর্মের জন্য এ বিভাগের সেকশন অফিসার পদটিও শূন্য। কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে মনিরুজ্জামান তুষার নামক একজন নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিভাগের সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. এ. কে. এম রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষক সংকটের কারণে মূলত সেশনজট হচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন কারণে সেশনজট হলেও বর্তমানে আমরা সেশনজট কমিয়ে আনতে অনেক আন্তরিক। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০১৭-১৮ সেশন থেকে বিজ্ঞান অনুষদের সকল বিভাগের ক্লাস এক সাথে শুরু হবে এবং পরীক্ষাও একসাথে শুরু হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist