নাজমুল মোল্লা, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)

  ০৭ মার্চ, ২০১৮

সিরাজদিখানে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে অনিয়ম

হতদরিদ্রের কাজে বেকু ব্যবহার অর্থের লেনদেন

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসূচি (কাবিটা)তে দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোয়া দুই লক্ষাধিক টাকার কাজে প্রকল্প কর্মকর্তা কর্তৃক অর্থ কেটে রাখা, স্থানীদের কাছ থেকে ঠিকাদারের অর্থ আদায়, কাজে অনিয়মসহ খেলার মাঠের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া গত এক মাসে রাস্তার কাজ হয়েছে মাত্র ২৫০ ফিট। অবশিষ্ট দশদিনে বাকি ২০০ কাজ কি করে সম্পাদন করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প অফিসের মাধ্যমে কাগজে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা নির্মাণ ব্যয়ে কোলা অগ্রদূত সমিতি থেকে সেলিম লস্করের বাড়ি পর্যন্ত ৪৫০ ফিট রাস্তার জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচি বরাদ্দ দেয়া হয়। এজন্য কোলা ইউপি চেয়ারম্যান মীর লেয়াকত আলীকে সভাপতি ও কোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নোবেল হাওলাদারকে সদস্য সচিব করা হয়। আর এই কাজের জন্য ঠিকাদারি দেওয়া হয় স্থানীয় সালাম সিকদার, সোহেল ও ফেরদৌছসহ কয়েকজনকে।

তবে নাম না প্রকাশের শর্তে ইউনিয়নের সাবেক এক ইউপি সদস্য অভিযোগ করেন, প্রকল্পের মোট টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রকল্প কর্মকর্তা কাজী ইমতিয়াজ আশফাক উৎকোচ রেখে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার সঙ্গে উঠোন সংযোগ দেওয়ার নামে ঠিকাদাররা ৫০-৬০ হাজার টাকা নিয়েছে।

এদিকে হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকার ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হলেও উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পশ্চিম কোলা গ্রামে দরিদ্রদের বদলে বেকু (এক্সেবেটর মেশিন) দিয়ে প্রকল্পে মাটি কাটা হচ্ছে। এমনকি কোন প্রকল্পের কাজই সঠিক ভাবে করা হয়নি। এর মধ্যে মালখানগর ইউনিয়নের নাইশিং প্রকল্প, কোলা ইউপি ৪ নং ওয়ার্ড প্রকল্প, রসুনিয়া ইউপি চোরমদ্দন প্রকল্প, শেখর নগর ইউপি ২ টি প্রকল্প, বয়রাগাদি ইউপির ২ টি প্রকল্পসহ উপজেলায় আরো কয়েকটি প্রকল্পের একই অবস্থা হয়েছে বলে জানা যায়। এলাকার গোচারণ খেলার মাঠের মাটি কেটে নিয়ে নির্মাণাধীন রাস্তা ভরাটেরও অভিযোগ আছে।

কোলা ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। প্রকল্প সচিব ও কোলা ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নোবেল হাওলাদার জানান, আমরা খেলার মাঠ বা ক্লাবে জায়গা কাটি নাই। আমরা যেখান থেকে মাটি কাটছি তা মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জায়গা। চেয়াম্যান সাহেব প্রকল্পের সব কিছু জানেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গ স্বীকার করেন তিনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী ইমতিয়াজ আশফাক বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে, মাঠ না কাটার জন্য বলেছি, চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলী আমাকে জানিয়েছে মাঠের পাশে রাস্তার জায়গা থেকে মাটি কাটা হয়েছে। আমি ছুটিতে আছি। প্রকল্প কাজের জন্য অর্থ কেটে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন সিরাজদিখান ইউএনও তানবীর মোহাম্মদ আজিম জানান, বিষয়টা আমি স্থানীয় এক সাবেক ইউপি সদস্যের কাছ থেকে জেনেছি। চেয়ারম্যানকে রাস্তাটির সঠিক ভাবে কাজ করা ও সমস্যাগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রকল্প কর্মকর্তা কাজী ইমতিয়াজ আশফাক পারিবারিক সমস্যার কারণে আমার কাছ থেকে ছুটি নিয়েছে। আসলেই বিস্তারিত জানতে পারব। কোথাও কোন অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist