চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিটিসিএল সেবা নিয়ে গ্রাহকরা নাখোশ
২০১২ সালের জানুয়ারিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশনস লিমিটেড-বিটিসিএল’র সচল সংযোগের সংখ্যা ছিল ৩৭২৬টি। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সংযোগের সংখ্যা নেমে এসেছে ১৭১৬টিতে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে অর্ধেকের বেশি গ্রাহক তাদের সংযোগ সমর্পন (বাতিল বা বিচ্ছিন্ন) করেছেন। গ্রাহকরা বলছেনÑ বিটিসিএলের সেবার মান একেবারেই তলানীতে নেমে গেছে। এ জন্যই মূলত সংযোগ সমর্পন করছেন গ্রাহকরা। শহরের মিস্ত্রিপাড়ার মশিউর রহমান, স্বরূপনগরের আসগার হোসেন, বারঘোরিয়ার ইব্রাহিম আলীসহ আরো বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। যারা গত তিন বছরের মধ্যে সংযোগ সমর্পন করেছেন। এদের মধ্যে মশিউর রহমান বলেন, একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল টেলিফোন সংযোগ একটি যন্ত্রণার নাম, তাই সমর্পন করে দিয়েছি। একে তো কোন সেবা পাওয়া যায় না তার উপর টেলিফোনের তার চুরির উপদ্রব বেড়ে গিয়েছিল। তাই বাধ্য হয়েই টেলিফোন সংযোগ ফিরিয়ে দিয়েছি। ইব্রাহিম আলী জানান, টেলিফোন সংযোগ নেয়ার সময় তাকে ঘুষ দিতে হয়েছিল। পরবর্তীতে কোনো সমস্যা হলে তিনি অফিসে অভিযোগ করতেন। এরপরে যে লাইনম্যান ও অন্য কর্মচারীরা মেরামত করতে আসতেন তাদেরও ঘুষ দিতে হতো। এসব কারণেই তিনি টেলিফোন সংযোগ সমর্পন করে দেন। আসগর আলী বলেন- কোনো সমস্যা হলে অভিযোগ দেওয়ার পরে এমনও হয়েছে যে, দুই সপ্তাহ পরে লোক এসে ঠিক করে দিয়ে গেছে। ওই দুই সপ্তাহ আমার সংযোগটা কিন্তু অকেজোই ছিল। আর প্রায়ই লাইনের সমস্যা হতো। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়েই সংযোগ সমর্পন করি। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেনÑসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের এমন নিম্নমানের সেবা নিয়ে। পুরাতন বাজারের এক গ্রাহক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি প্রায় ২২ বছর ধরে টেলিফোন সংযোগ ব্যবহার করছেন। কিন্তু সেবার মানের উন্নতি হওয়ার পরিবর্তে তিনি অবনতিই দেখছেন। শুধু টেলিফোন সেটের আধুনিকায়ন হয়েছে, সেবার নয়। শহরের পাঠানপাড়ার অ্যাডভোকেট ইয়াসমিন সুলতানা রুমা বললেনÑ আগেই ভাল ছিল। এখন টেলিফোনে কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই তিক্ত অভিজ্ঞতা হচ্ছে। বেশিরভাগ সময়ই অপরপ্রান্তের জন্য আমার কথা শুনতে পাচ্ছে না। এছাড়া কথা বলার সময় অতিরিক্ত ‘শো-শো’ শব্দ হয়। সব মিলিয়ে বিটিসিএল গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থই হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে বিটিসিএল-র সহকারী প্রকৌশলী এসএম আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি। তিনি জানান, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগে।
"